কোষ প্রাচীর (Cell Wall) কাকে বলে ? কোষ প্রাচীরের গঠন সংক্ষেপে বর্ণনা করাে।
ব্যাকটেরিয়া ও উদ্ভিদকোশের কোশপর্দার বাইরে সেলুলােজ নির্মিত যে পুরু, দৃঢ়, ভেদ্য, স্থিতিস্থাপক জড় আবরণ বর্তমান তাকে কোষ প্রাচীর বলে।
কোষ প্রাচীরের গঠন বর্ণনা করো
একটি পরিণত উদ্ভিদকোশের কোষপ্রাচীরের নিম্নলিখিত অংশগুলি দেখা যায়।
মধ্যচ্ছদা বা মধ্য ল্যামেলা : পাশাপাশি বিন্যস্ত দুটি উদ্ভিদকোশের অন্তর্বর্তী অঞলে উপস্থিত সাধারণ স্তরটিকে মধ্যচ্ছদা বলে। এটি প্রধানত ক্যালশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম পেকটেট দ্বারা গঠিত।
প্রাথমিক কোষপ্রাচীর : মধ্যচ্ছদার ভিতরের দিকে সেলুলােজ, হেমিসেলুলােজ ও পেকটিন দ্বারা নির্মিত স্তরকে প্রাথমিক কোশপ্রাচীর বলে। এটি পাতলা (স্থূলত্ব 1-3 um) এবং স্থিতিস্থাপক।
গৌণ কোষ প্রাচীর : প্রাথমিক কোষ প্রাচীরের ভিতরের দিকে প্রধানত সেলুলােজ, হেমিসেলুলােজ, লিগনিন, পেকটিন, সুবেরিন প্রভৃতি পদার্থ সঞ্চিত হয়ে যে স্তর গঠন করে , তাকে গৌণ কোষপ্রাচীর বলে। এই স্তরটি পুরু (স্থূলত্ব 5-10 um) , শক্ত ও ভেদ্য প্রকৃতির হয়।
কোষ প্রাচীরের কাজ গুলি কি কি?
কোষ প্রাচীরের কাজ :
1) দৃঢ় কোষ প্রাচীর উদ্ভিদকোশকে বাহ্যিক আঘাত থেকে সুরক্ষিত রাখে।
2) কোষপ্রাচীর উদ্ভিদকোশকে একটি নির্দিষ্ট আকার ও যান্ত্রিক দৃঢ়তা প্রদান করে।
3) ভেদ্য কোষ প্রাচীরের মধ্য দিয়ে কোশে জল , লবণের আদানপ্রদান সম্ভব হয় ও প্লাজমডেসমাটা সন্নিহিত দুটি উদ্ভিদকোষের মধ্যে সাইটোপ্লাজমিক যােগসূত্র বজায় থাকে।
4) উদ্ভিদদেহে রোগজীবাণুর প্রবেশে বাধা দেয়।
5) কোষ প্রাচীরের কিউটিন ও সুবেরিন বাম্পমােচনের হার কমাতে বিশেষ ভূমিকা গ্রহন করে।
***প্রাণীকোশে কোষপ্রাচীর দেখা যায় না কিন্তু উদ্ভিদকোশে কোষপ্রাচীর দেখা যায়। কেন ?
👉প্রাণীকোশের তুলনায় উদ্ভিদকোশের যান্ত্রিক দৃঢ়তা অনেক বেশি থাকে। উদ্ভিদ যেহেতু স্থান পরিবর্তন করতে পারে না, সেকারণে পরিবেশের সমস্ত প্রতিকূল পরিস্থিতির মােকাবিলা করতে হয় উদ্ভিদকে। এরজন্য উদ্ভিদকোশের অতিরিক্ত সুরক্ষার প্রয়ােজন হয়। কোষপ্রাচীর উদ্ভিদকে এই অতিরিক্ত সুরক্ষা দিয়ে থাকে। উপরিউক্ত কারণের জন্যই প্রাণীকোশে কোষপ্রাচীর থাকে না কিন্তু উদ্ভিদকোশ কোষ প্রাচীর যুক্ত হয়।