আমরা এই পোস্টে জানতে চলেছি আদর্শ নিউরন কাকে বলে?, আদর্শ নিউরনের বিভিন্ন অংশ, নিউরনের কাজ, অ্যাক্সন কাকে বলে?, ডেনড্রন কাকে বলে? ইত্যাদি।
আদর্শ প্রধানত তিনটি গঠনগত অংশ— [1] সেল বডি বা কোশদেহ, [2] অ্যাক্সন এবং [3] ডেনড্রন।
কোশদেহ বা সেলবড়ি বা সোমা (Cell Body)
[1] নিউরনের প্রোটোপ্লাজম সমন্বিত সর্বাপেক্ষা স্ফীত গোলাকার বা ডিম্বাকার বা তারকাকার অংশটিকে কোশদেহ বলে।
[2] কোশদেহের কেন্দ্রে সুগঠিত আদর্শ নিউক্লিয়াস থাকে।
[3] কোশদেহের সাইটোপ্লাজমকে নিউরোপ্লাজম বলা হয়।
[4] নিউরোপ্লাজমে অবস্থিত নিউক্লিওপ্রোটিন নির্মিত দানাগুলিকে নিজল দানা বলে।
[5] কোশদেহের মধ্যে সূক্ষ্ম তন্তুর মতো নিউরোফাইব্রল উপস্থিত।
[6] অন্যান্য কোশ – অঙ্গাণুর মধ্যে মাইটোকনড্রিয়া ও গলগি বডি উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। তবে সেন্ট্রোজোেম উপস্থিত থাকলেও তা নিষ্ক্রিয় হয় । তাই নিউরোন বিভাজিত হতে পারে না।
ডেনড্রন (what is Dendron)
[1] যে ক্ষুদ্র প্রোটোপ্লাজমীয় শাখান্বিত সূত্র নিউরোনের কৌশদেহ থেকে নির্গত হয় তাকে ডেনড্রন বলে ডেনড্রন সাধারণত গোড়ার দিকে চওড়া হয় এবং ক্রমশ সরু হয়ে শাখান্বিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে।
[2] ডেনড্রনে মায়েলিন সিদ্ এবং সোয়ান কোশ থাকে না।
[3] এতে নিউরোপ্লাজম , নিউরোফাইব্রিল এবং নিল দানা থাকে।
অ্যাক্সন (What is Axon)
[1] নিউরোনের যে দীর্ঘ ও সাধারণত শাখাহীন অংশ কোশদেহ থেকে নির্গত হয় তাকে অ্যাক্সন বলে।
[2] অ্যাক্সনের অভ্যন্তরে যে অর্ধতরল সাইটোপ্লাজম থাকে তাকে অ্যাক্সোপ্লাজম বলে।
[3] কোশদেহের যে শাঙ্কব অংশ থেকে অ্যাক্সন উৎপন্ন হয় তাকে অ্যাক্সন হিলক বলে।
[4] অ্যাক্সোপ্লাজম যে পাতলা পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে তাকে অ্যাক্সোলেমা বলে।
[5] অ্যাক্সোলেমার বাইরে স্নেহজাতীয় পদার্থ সঞ্চিত হয়ে একটি বিশেষ ধরনের আবরণ তৈরি করে, একে মায়েলিন সিদ্ বলা হয়।
[6] মায়েলিন সিদ্ স্থানে স্থানে বিচ্ছিন্ন হয়ে যে ছোটো ছোটো পর্বের সৃষ্টি করে তাদের র্যানভিয়ারের পর্ব বলে। [7] মায়েলিন সিদযুক্ত স্নায়ুতন্তুকে মায়েলিনেটেড স্নায়ু বা মেডুলেটেড স্নায়ু বলে। যেসব স্নায়ুতন্তুর মায়েলিন সিদ্ থাকে না সেগুলিকে নন্-মায়েলিনেটেড স্নায়ু বা নন্-মেডুলেটেড স্নায়ু বলে।
[৪] অ্যাক্সনের শেষ প্রান্ত সূক্ষ্ম শাখান্বিত হয়ে এন্ড ব্রাশ বা প্রান্তবুরুশ গঠন করে।
[9] প্রান্তবুরুশের প্রতিটি শাখাপ্রান্ত স্ফীত হয়ে প্রান্তীয় নবূ বা প্রান্তস্ফীতি গঠন করে।
আরও পড়ুন:-
- কোষ পর্দা কাকে বলে? | কোষ পর্দার গঠন ও কাজ |
- কোষ প্রাচীর কি | কোষ প্রাচীরের গঠন ও কাজ
- গ্রন্থি কাকে বলে? | বহিঃক্ষরা গ্রন্থি | অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি | মিশ্র গ্রন্থি
নিউরন কতপ্রকার ও কি কি (Types of Neuron)
নিউরনের কার্যগত প্রকারভেদ কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী নিউরোন তিন ধরনের।
সংজ্ঞাবহ নিউরন : যে নিউরন গ্রাহক থেকে স্নায়ুস্পন্দনকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে পরিবহণ করে তাকে সংজ্ঞাবহ নিউরন বলে। এই ধরনের নিউরন বাইরে থেকে ভিতরে উদ্দীপনা বহন করে বলে এদের অন্তর্বাহী বা অ্যাফারেন্ট নিউরনও বলা হয়।
আজ্ঞাবহ নিউরন: যে নিউরোন কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে উদ্দীপনা কারকে (ইফেকটর-এ) বহন করে তাকে আজ্ঞাবহ নিউরন বলে। এইপ্রকার নিউরন দেহের অভ্যন্তর থেকে বাইরের দিকে স্নায়ুস্পন্দন বহন করে বলে এদের বহির্বাহী বা ইফারেন্ট নিউরনও বলা হয়ে থাকে।
সহযোগী নিউরোন : যে নিউরন সংজ্ঞাবহ ও আজ্ঞাবহ নিউরোনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে তাকে সহযোগী নিউরন বলে। এই নিউরনগুলির অপর নাম রিলে নিউরন।
নিউরনের কাজ
ডেনড্রন : কোনো পেশি, গ্রাহক অঙ্গ বা অন্য কোনো নিউরন থেকে স্নায়ুস্পন্দন গ্রহণ করে তা কোশদেহে প্রেরণ করা।
অ্যাক্সন : একটি নিউরোনে কোশদেহ থেকে স্নায়ুস্পন্দন গ্রহণ করে তা পরবর্তী নিউরন বা কারক অঙ্গে প্রেরণ করা।
Good post