চলন ও গমন কি?
চলন ও গমন জীবের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। উত্তেজনায় সাড়া দেওয়া জীবের প্রধান ধর্ম। বহিস্থ উদ্দিপকের প্রভাবে অধিকাংশ জীবই কিছু না কিছু সাড়া দেই।
চলন কি?
নিজ চেষ্টায় অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নড়া চড়া করাকে সঞ্চালন বা চলন বলে।
চলনের সংজ্ঞা: যে প্রক্রিয়াই জীব এক জায়গায় স্থির থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বা উদ্দিপকের প্রভাবে দেহের কোনও অংশ সঞ্চালন করে তাকে চলন বলে।
গমন কি?
খাদ্যসংরহ, আত্মরক্ষা, বাসস্থান, খোজা ও প্রজনের জন্য প্রাণীরা এক স্থান থেকে অন্য স্থনে গমন করে। স্বেচ্ছাই জীবের সামগ্রিক স্থান পরিবর্তনকেই গমন বলে।
গমনের সংজ্ঞা: যে প্রক্রিয়ার জীব স্বেচ্ছায় অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সঞ্চালনের মাধ্যমে সামগ্রিক স্থান পরিবর্তন করে, তাকে গমন বলে।
চলন ও গমনের পার্থক্য গুলি কি কি?
1) চলনে জীব সামগ্রিক ভাবে স্থান পরিবর্তন করে না। অন্যদিকে,গমনে জীব সামগ্রিক ভাবে স্থান পরিবর্তন করে।
2) কোন নির্দিষ্ট স্থানে আবদ্ধ থেকেও চলন সম্ভব।
অন্যদিকে, কোন নির্দিষ্ট স্থানে আবদ্ধ থেকে গমন অসম্ভব।
3) চলনে জীব দেহের অঙ্গ বিশেষের সঞ্চালন ঘটে মাএ।
অন্যদিকে, গমনে সমগ্র জীবদেহের সঞ্চালন ঘটে।
4) চলন ছাড়া গমন অসম্ভব।
অন্যদিকে, গমন ছাড়া চলন সম্ভব।
প্রাণীদের গমনে সাহায্যকারী বিভিন্ন অঙ্গ
আমিবা ক্ষণপদ বা সিউডোপডিয়া
হাইড্রা কর্সিকা
ইউগ্লিনা ফ্লজেলা
প্যারামেসিযাম সিলিয়া
তারামাছ নালীপদ বা টিউব ফীট
শামুক মাংসল পদ
ব্যাং পা
পক্ষী ডানা ও পা
তিমি প্যাডেল
কেঁচো সিটি
আরশোলা, কাঁকড়া বহিঃকঙ্কাল
গমনে অক্ষম কয়েকটি প্রাণী: স্পঞ্জ, সাগরকুসুম, প্রবাল।
গমনের সক্ষম কয়েকটি উদ্ভিদ: ক্ল্যামাইডোমোনস, ভলভক্স।
উদ্ভিদের চলন (Movement of plants)
উদ্ভিদের প্রধানত তিন ধরনের চলন দেখা যায়, যথা
a) ট্যাকটিক চলন।
b) ট্রপিক চলন।
c) ন্যাস্টিক চলন।
ট্যাকটিক চলন(Tactic Movement): বহিষ্থ কোনও উদ্দিপকের গতিপথ ও তীব্রতার প্রভাবে উদ্ভিদ বা উদ্ভিদ অঙ্গের সামগ্রিক স্থান পরিবর্তনকে ট্যাকটিক চলন বলে।
ট্যাকটিক চলন সাধারণত চার ধরনের। যথা
i) ফটোট্যাকটিক চলন (phototactic)
ii) থার্মট্যাকটিক চলন ( thermotactic)
iii) কেমোট্যাকটিক চলন (chemotactic)
iv) হাইড্রট্যাকটিক চলন( hidrotactic)
ট্রপিক চলন (Tropic Movement): উদ্ভিতের স্থায়ী অঙ্গের চলন যখন উদ্দিপকের গতিপথ অনুসারে হয়, তখন সেই বক্র চলন কে ট্রপিক চলন বলা হয়।
ট্রপিক চলন তিন প্রকারের। যথা:-
i) ফটোট্রপিক চলন (phototropic movement): উদ্ভিদের শাখা প্রশাখা আলোর উত্সের দিকে সঞ্চালিত হয়।
ii) জিওট্রপিক চলন (grotropic movement): উদ্ভিদের মূল অভিকর্ষের টানে পৃথিবীর অভিকর্ষের কেন্দ্রের দিকে সঞ্চালিত হয়।
iii) হাইড্রট্রপিক চলন( hidrotropic movement): উদ্ভিদের মূল আলোর উত্সের দিকে সঞ্চালিত হয়।
ন্যাস্টিক চলন (nastic movement): উদ্ভিদের স্থায়ী অঙ্গের চলন যখন উদ্দিপকের তীব্রতার বা ব্যাপ্তি অনুসারে হয়, তাকে ন্যাস্টিক চলন বলে।
i) ফটোন্যাস্টি (photonasty movement): পদ্মফুল তীব্র আলোতে ফোটে এবং কম আলোতে মুদে যায়।
ii) থার্মন্যাস্টি (thermonasty movement): টিউলিপ ফুল বেশী উষ্ণতায় ফোটে এবং কম উষ্ণতায় মুদে যায়।
iii) কেমোন্যাস্টি(chemonasty movement): সূর্যশিশির উদ্ভিদ পতঙ্গ আকৃষ্ট করে।
iv) সিসমোন্যাস্টি (seismo nasty movement): লজ্জাবতীর পাতা স্পর্শ করা মাত্রই পাতার পত্রক্গুলি মুদে যায়।
চলন ও গমন সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন উত্তর
- গমনে সক্ষম উদ্ভিদের নাম- ক্ল্যামাইডোমোনাস, ভল্ভক্স।
- লজ্জাবতী লতার পাতা ছোয়া লাগলে তা সঙ্গে সঙ্গে বুজে যায়,এটি কি ধরনের চলন?- সিসমোন্যাস্টি।
- আরশোলার ক জোড়া ডানা আছে?- 2 জোড়া।
- আরশোলার ক জোড়া পা আছে?- 3 জোড়া।
- কোন প্রাণীর বহিঃকঙ্কাল গমনে সাহায্য করে?- আরশোলা,কাঁকড়া।
- মেরুদন্ডি প্রাণীর দেহে কত রকম পেশী আছে?- 3 ধরনের।
- একটি শিশুর দেহে মোট কতগুলি অস্থি?- 350 টি।
- মানবদেহের সবচেয়ে ছোট অস্থির নাম- স্টেপিস।
- কোন পাখনা মাছের দিক পরিবর্তন করে?- পুচ্ছ পাখনা।
- মাছের কোন অঙ্গ মাছ কে ভাসতে সাহায্য করে?- মাছের পটকা।
- সামুদ্রিক কচ্ছপএর গমন অঙ্গ কি?- ফ্লিপর।
- আমিবা কখন ক্ষণপদ সৃষ্টি করে?- গমন ও খাদ্যগ্রহণের সময়।
- মানুষের মেরুদণ্ডে কয়টি অস্থি আছে?- 33 টি।
14. মানুষের শরীরে নিষ্ক্রিয় পেশী কোনটি?- কানের পেশী।
- মানুষের শরীরে ছোট পেশী কোনটি?- স্টেপিডিয়াস।
- মানুষের শরীরে বড় পেশী কোনটি?- গ্লটীয়াস ম্যাক্সিমাস।
- মানবদেহের পাঁজরের সংখ্যা- 24 টি।
- উদ্ভিদের বিটপ আলোর দিকে আগায় কেন?- ফটোট্রপিক চলনের জন্য।
You completed a number of fine points there. I did a search on the matter and found a good number of persons will agree with your blog. Denny Sznejkowski