যে প্রক্রিয়ায় মাতৃ কোষ বিভাজিত হয়ে অপত্য কোষ সৃষ্টি করে তাকে কোষ বিভাজন বলে।
এটি প্রধানত তিন প্রকারের। যথা
1) মাইটোসিস।
2) মিয়োসিস।
3) অ্যামাইটোসিস।
কোষ বিভাজনের সময় নিউক্লিয়াসের বিভাজনকে বলা হয় ক্যারিওকাইনেসিস। অপত্য নিউক্লিয়াস গঠিত হওয়ার পর কোষের সাইটোপ্লাজম সমান দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে এই পদ্ধতিকে সাইটোকাইনেসিস বলে।
উদ্ভিদ কোষে সাইটোকাইনেসিস কোশপাত বা সেলপ্লেট গঠনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
প্রাণী কোষে সাইটোকাইনেসিস ক্লিভেজ গঠনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
কোষ বিভাজনের প্রকারভেদ
মাইটোসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে?
যে প্রক্রিয়ায় মাতৃ কোষের নিউক্লিয়াস একবার মাত্র বিভাজিত হয়ে সমআকৃতি, সমগুন, সমসংখ্যক ক্রোমোজোম বিশিষ্ঠ দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে তাকে মাইটোসিস কোষ বিভাজন বলে।
মাইটোসিস কোষ বিভাজনে মাতৃকোষ থেকে সৃষ্ট অপত্য কোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা ও সাইটোপ্লাজম এর পরিমান একই থাকে। তাই মাইটোসিস কে সম বিভাজন বা সদৃশ বিভাজন বলে।
মাইটোসিস কোষ বিভাজনের স্থান
বর্ধনশীল মূলের অগ্রভাগে এবং কাণ্ডে, প্রাণীদের ভ্রূণের পরিস্ফুটনের সময় সমস্ত দেহ কোষের এই বিভাজন পরিলক্ষিত হয়।
মাইটোসিস প্রধানত দেহের কোষের বিভাজন। এর পদ্ধতি চারটি দশায় সম্পন্ন হয়। যথা–
1) প্রোফেজ
2) মেটাফেজ
3) অ্যানাফেজ এবং
4) টেলোফেজ।
প্রোফেজ দশায় ক্রোমোজোমের স্থুলী করন, আকৃতি হ্রাস, কুণ্ডলীকরণ ঘটে। এইসময় ক্রোমোজোমের ক্রোমাটিডদ্বয় সেন্ট্রোমিয়ার এর সঙ্গে যুক্ত থেকে পাশাপাশি অবস্থান করেন।
মেটাফেজ দশার শুরুতে নিউক্লিয় পর্দা এবং নিউক্লিওলাসের বিলুপ্ত হয় এবং বেম তন্তু গঠিত হয়। ক্রোমোজোম গুলি বেম তন্তুর বিষুব অঞ্চলে অবস্থান করে। এই দশায় ক্রোমোজোম গুলি সর্বাপেক্ষা স্থূল ও স্পষ্ট হয়।
অ্যানাফেজ দশায় সেন্ট্রোমিয়ার বিভাজিত হয় এবং ক্রোমোজোমের ক্রোমাটিডদ্বয় বিচ্ছিন্ন হয়ে অপত্য ক্রোমোজোম গঠন করে এবং বেমের বিপরীত মেরুর দিকে সরে যেতে থাকে। কোষ বিভাজনের এই দশা সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে ক্রোমোজোম গুলি V, L, I, J আকৃতির হয়।
টেলোফেজ দশায় অপত্য ক্রোমোজোমগুলি বেম এর বিপরীত মেরুতে পৌঁছায় এবং তাদের ঘিরে নিউক্লিয় পর্দার আবির্ভাব ঘটে, নিউক্লিওলাস এর পুনার্বি ভাব হয়ে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াসের সৃষ্টি হয়।
মিয়োসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে?
যে বিভাজন পদ্ধতিতে কোন মাতৃকোষের নিউক্লিয়াসটি পরপর দুবার বিভাজিত হয়ে মাতৃকোষের অর্ধসংখ্যক ক্রোমোজোম সমন্বিত চারটি অপত্য কোষ সৃষ্টি করে তাকে মিয়োসিস কোষ বিভাজন বলে।
মিয়োসিস কোষ বিভাজনের স্থান
প্রধানত জীবের জনন মাতৃকোষ, সপুষ্পক উদ্ভিদের পরাগধানী ও ডিম্বকের মধ্যে, সমস্ত ফার্ন জাতীয় উদ্ভিদের রেনু মাতৃকোষে, নিম্নশ্রেণীর উদ্ভিদে জাইগোস্পোরের অঙ্কুরোদগমের সময় এবং প্রাণী কোষের শুক্রাশয় এবং ডিম্বাশয় জনন কোষ উৎপাদনের সময় মিয়োসিস কোষ বিভাজন ঘটে।
মানুষের জনন মাতৃকোশের ক্রোমোজোম সংখ্যা 23 জোড়া। জনন মাতৃকোষ মিয়োসিস কোষ বিভাজন দ্বারা বিভাজিত হয়ে 23 টি ক্রোমোজোম বিশিষ্ট জনন কোষ উৎপন্ন হয়।
মিয়োসিস কোষ বিভাজনের বিভিন্ন দশা
মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রধানত জীবদেহের জনন মাতৃকোষ ঘটে। মাতৃ নিউক্লিয়াসের দুবার বিভাজন ঘটে প্রথমটি হ্রাস বিভাজন এবং দ্বিতীয়টির সদৃশ বিভাজন। মিয়োসিস বিভাজনের ফলে মাতৃ কোষের ক্রোমোজোমের সংখ্যা অপত্য কোষের অর্ধেক হয়ে যায়, এর ফলে প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যা ধ্রুবক থাকে।
প্রথম প্রফেজ-এর লেপ্টোটিন উপদশায় দ্বিগুণ সংখ্যক ক্রোমোজোম গুলি পা পাক হিন্দ লম্বা সুতোর মতো অবস্থান করে
জাইগোটিন উপদশায় সমসংস্থ মাতৃ ও পিতৃ ক্রোমোজোম জোড়ায় জোড়ায় অবস্থান করে এদের বাইভ্যালেন্ট বলে।
প্যাকেটিন উপদশায় বাইভ্যালেন্ট এর ক্রোমোজোম গুলি লম্বালম্বিভাবে বিভাজিত হয়ে টেট্রাড গঠন করে। এই উপদশায় ক্রসিংওভার ঘটে এবং ক্রসিংওভার এর ফলে প্রতি বাইভ্যালেন্টের দেহে X এর মত দৃশ্যমান অংশকে কায়াজমাটা বলে।
ডিপ্লোটিন উপদশায় ক্রোমোজোমের কুণ্ডলীগুলি আরও বেশি বৃদ্ধি পায় এবং কায়াজমা ক্রমশ ক্রোমাটিডের প্রান্তের দিকে সরে যায়।
ডায়াকাইনেসিস উপদশায় কায়াজমা বাইভ্যালেন্টাইন এর প্রান্তে পৌঁছয় ক্রোমোজোম গুলি আকারে আরও ছোট ও মোটা হয়।
প্রথম মেটাফেজ দশায় বেম গঠিত হয় এবং বেমের বিষুব অঞ্চলে বাইভ্যালেন্ট গুলি অবস্থান করে।
প্রথম অ্যানাফেজ দশায় বাইভ্যালেন্ট এর ক্রোমোজোম দুটি বিপরীত মেরুর দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
প্রথম টেলোফেজ দশায় দুটি অপত্য নিউক্লিয়াস উৎপন্ন হয়।
অপত্য নিউক্লিয়াস দুটি পুনরায় দ্বিতীয় প্রোফেজ, দ্বিতীয় মেটাফেজ, দ্বিতীয় অ্যানাফেজ, দ্বিতীয় টেলোফেজ, এর মাধ্যমে চারটি অপত্য নিউক্লিয়াস গঠন করে। চারটি অপত্য নিউক্লিয়াস সৃষ্টি হলে সাইটোকাইনেসিস ঘটে, ফলে চারটি অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়। প্রতিটি অপত্য কোষ মাতৃকোষের অর্ধসংখ্যক ক্রোমোজোম বিশিষ্ট হয়।
অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে?
যে প্রক্রিয়ায় কোনো মাতৃকোষ তার নিউক্লিয়াসের সরাসরি বিভাজন ঘটিয়ে অপত্য কোষ সৃষ্টি করে তাকে অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন বলে।
অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজনের স্থান
ব্যাকটেরিয়া এবং ইস্ট অ্যামিবা এককোষী জীব দেহের এই প্রকার কোষ বিভাজনে পরিলক্ষিত হয়।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। পোস্টটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে share করতে ভুলবেন না।
It is so so very and too good for me and all of students.
Thank you Himangshu Roy
keep supporting us….
share with your friends
OMG thanks you so much for posting this. It’s really helpful.😁
Thank you mam. we are happy that you like our content. keep visiting us and join us with whatsapp and telegram channel
khub sundor information. Thank you sir. Mitosis kosh bivajon 5 ti doshaay somporno hoy.
This bolechhen kichhu kichhu text book a prophase ta k du vage vag korechhe jemon early prophase and late prophase
asha kori nicher deyo link ta kichhuta doubt clear korbe
https://www.khanacademy.org/science/ap-biology/cell-communication-and-cell-cycle/cell-cycle/a/phases-of-mitosis
thank you
Pingback: উদ্ভিদ কলা কাকে বলে | ভাজক কলা(Meristematic Tissue) | স্থায়ী কলা (parmanent tissue) – Studious
Pingback: জনন কাকে বলে | জননের প্রয়োজনীয়তা কি | জননের প্রকারভেদ – Studious
আমার আপনার পোস্টটি অনেক ভালো লেগেছে। আমিও আপনার মতো ভালো ব্লগার হতে চায়। প্লিজ আমার এই পোস্টটি কোষ বিভাজন কাকে বলে ,একটু চেক করবেন। আমার জন্য দোয়া করবেন।