Hello বন্ধুরা আজ আমরা এই পোস্ট টি জানব উদ্ভিদ কলা সম্পর্কে, জানব উদ্ভিদ কলা কি?, উদ্ভিদ কলার প্রকার ভেদ, ভাজক কলা কাকে বলে ? ভাজক কলার গঠনগত বৈশিষ্ট্যগুলি । ভাজক কলার কাজ কি? স্থায়ী কলার অবস্থান উল্লেখ করো। স্থায়ী কলার গঠনগত বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। স্থায়ী কলার কাজ কি? ইত্যাদি।
উদ্ভিদ কলা কাকে বলে ?( Plant Tissue ) :
উদ্ভিদদেহে উৎপত্তিগতভাবে এক সম বা বিষম আকৃতির কোশসমষ্টি মিলিতভাবে একটি নির্দিষ্ট কাজ করলে , তাদের একত্রে উদ্ভিদ কলা বলে।
উদ্ভিদ কলার শ্রেণিবিভাগ
উদ্ভিদ কলা সাধারণত দুভাগে ভাগ করা হয়। ভাগ গুলি হলো
১) ভাজক কলা
2) স্থায়ী কলা।
ভাজক কলা (Meristematic Tissue)
ভাজক কলা (Meristematic Tissue ; meristos = বিভাজনক্ষম) : উদ্ভিদের মূল ও কাণ্ডের অগ্রভাগে অবস্থিত একই প্রকার বিভাজনক্ষম যে অপরিণত কলার কোশগুলি ক্রমাগত বিভাজিত হয়ে নতুন কোশ সৃষ্টি করে, তাকে ভাজক কলা বলে।
ভাজক কলার অবস্থান
(i) ভাজক কলা উদ্ভিদের বর্ধনশীল অঞ্চলে বিশেষ করে কাণ্ড , মূল , শাখা প্রভৃতির অগ্রভাগে উপস্থিত থাকে।
(ii) পাতা ও ফুলের কুঁড়িতে ভাজক কলা থাকে।
(iii) ব্যক্তবীজী ও গুপ্তবীজী উদ্ভিদের নালিকা বান্ডিলে ক্যাম্বিয়াম নামক গৌণ ভাজক কলা বর্তমান।
ভাজক কলার বৈশিষ্ট্য :
- কোশের প্রকৃতি : কোশগুলি সজীব, অপরিণত এবং বিভাজনের মাধ্যমে নতুন কোশ সৃষ্টি করে। প্রত্যেকটি কোশে একটি করে সুস্পষ্ট নিউক্লিয়াস বর্তমান।
- আন্তঃকোশীয় স্থান : সজীব কোশগুলি ঘনসন্নিবিষ্টভাবে অবস্থান করে , ফলে কোনো কোশান্তর রন্ধ্র থাকে না।
- কোশের আকার : কোশের আকৃতি গোলাকার , ডিম্বাকার বা বহুভুজাকার হয়।
- কোশপ্রাচীর : কোশপ্রাচীর পাতলা , স্থিতিস্থাপক ও সেলুলোজ নির্মিত হয়।
- কোশের উপাদান : (a) কোশে বড়ো ও সুস্পষ্ট নিউক্লিয়াস ও ঘন সাইটোপ্লাজম থাকে। সাধারণত ভ্যাকুওল থাকে না বা থাকলেও ছোটো। (b) প্লাসটিড প্রোপ্লাসটিড অবস্থায় থাকে। (c) কোশে সঞ্চিত খাদ্য বা রেচন পদার্থ থাকে না। -কোশপ্রাচীর নিউক্লিয়াস -সাইটোপ্লাজম ভাজক কলা।
ভাজক কলার কাজ
1) সংশ্লেষমূলক কাজ ও শ্বসনের হার নিয়ন্ত্রণ করে।
2) ভাজক কলা ক্রমাগত মাইটোসিস পদ্ধতিতে বিভাজিত হয়ে উদ্ভিদ অঙ্গের বৃদ্ধি ঘটায়। উদ্ভিদ দেহে নতুন অঙ্গ উৎপাদনে নতুন পাতা , শাখা , কাক্ষিক মুকুল ) ও স্থায়ী কলা উৎপাদনে সাহায্য করে।
3) ভাজক কলার দ্বারা উদ্ভিদের ক্ষতস্থান পূরণ হয় ।
4) ঘাসজাতীয় উদ্ভিদকে প্রবল বায়ুপ্রবাহের সময় খাড়া হয়ে দাঁড়াতে পার্শ্বস্থ ভাজক কলা সাহায্য করে।
স্থায়ী কলা (Parmanent Tissue)
স্থায়ী কলা= ভাজক কলা থেকে সৃষ্ট কোশযুক্ত কলা যার কোনো বিভাজন ক্ষমতা নেই তাকে স্থায়ী কলা বলে।
স্থায়ী কলার অবস্থান
উদ্ভিদের মূল ও কাণ্ডের ত্বকে, মজ্জায়, বহিস্ত্বক ও অন্তস্ত্বকে, দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদের নালিকা বান্ডিলে স্থায়ী কলা অবস্থান করে।
স্থায়ী কলার বৈশিষ্ট্য :
- বিভাজন ক্ষমতা : কোশগুলি বিভাজনক্ষমতাহীন হয়
- কোশের প্রকৃতি : এই কলার কোশগুলি জীবিত বা মৃত প্রকৃতির হয়। জীবিত কোশগুলি প্রোটোপ্লাজমযুক্ত এবং মৃত কোশগুলি প্রোটোপ্লাজমবিহীন।
- কোশপ্রাচীর : এই কলার কোশগুলির কোশপ্রাচীর কখনও পাতলা আবার কখনও পুরু হয়। পাতলা প্রাচীরে সেলুলোজ ও পেকটিন পদার্থ উপস্থিত। পুরু প্রাচীরে বিভিন্ন অলংকরণ দেখা যায়।
- কোশের আকার : কোশগুলি নির্দিষ্ট আকৃতিযুক্ত অর্থাৎ , গোলাকার , ডিম্বাকার বা বহুভুজাকার হয় ।
- আন্তঃকোশীয় স্থান : এই কোশে কোশান্তর রন্ধ্র থাকতেও পারে , আবার নাও থাকতে পারে।
- কোশীয় অঙ্গাণু : কোশ নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজমযুক্ত বা বিহীন হয় । কোশে ভ্যাকুওল বর্তমান৷
স্থায়ী কলার কাজ :
(i) এই কলা উদ্ভিদকে দৃঢ়তা প্রদান করে।
(ii) স্থায়ী কলা উদ্ভিদে খাদ্য উৎপাদনে সাহায্য করে।
(iii) খাদ্য ও জল সংবহনে সাহায্য করে।
(iv) এই কলা খাদ্য ও জল সঞ্চয়েও সাহায্য করে।
Pingback: পাললিক শিলা ( Sedimentary Rocks ) কাকে বলে | সম্পূর্ণ তথ্য । – Studious
Good post
Great