নমস্কার বন্ধুরা, welcome আমাদের ওয়েবসাইট studiouss.com এ। আজ আমাদের পোস্ট টি হতে চলেছে বায়ুর চাপ সম্পর্কিত। আমরা এই পোস্ট টিতে জানবো বায়ুচাপ কাকে বলে?, বায়ুচাপের তারতম্যের কারণ, এবং বায়ুচাপের তারতম্যের কারণ গুলি সুন্দর ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করবো।
বায়ুচাপ কাকে বলে?
পৃথিবীতে চাদরের ন্যায় বেষ্টন করে থাকা বায়ুর যে ওজন বা চাপ পৃথিবীতে পড়ে, তাকে বায়ুচাপ বলে। সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুর চাপ সবচেয়ে বেশি 1013.2 মিলিবার। বায়ুচাপ দু প্রকার। যথা — উচ্চচাপ ও নিম্নচাপ।
বায়ুচাপের তারতম্যের কারণ
বায়ুচাপের তারতম্যের কারণ (বায়ুচাপের নিয়ন্ত্রক) : পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে নানা কারণে বায়ুচাপের তারতম্য হয় , কারণগুলি হল-
1) বায়ুতে উষ্ণতার তারতম্য : বায়ু উত্তপ্ত হলে প্রসারিত ও হালকা হয়ে উপরে উঠে যায়, ফলে বায়ুর ঘনত্ব এবং চাপ কমে, অর্থাৎ বায়ুর উষ্ণতা বাড়লে বায়ুর চাপ কমে। অন্যদিকে, বায়ুর উষ্ণতা কমে গেলে বায়ু আয়তনে সংকুচিত হয়ে ভারী হয়, বায়ুর ঘনত্ব বেড়ে যায়, ফলে বায়ুর চাপ বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ, উষ্ণতা ও বায়ুর চাপের মধ্যে বিপরীত সম্পর্ক দেখা যায়। বায়ুর উষ্ণতা বাড়লে বায়ুর চাপ কমে, বায়ুর উষ্ণতা কমলে বায়ুর চাপ বাড়ে। তাই বলা হয়— “Where Thermometer is high, Barometer is low.” নিরক্ষীয় অঞ্চলে উষ্ণতা বেশি , ফলে বায়ুর চাপ কম হয়।
2) জলীয় বাষ্পের তারতম্য : বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বায়ুচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। জলীয় বাষ্প সাধারণ বায়ু অপেক্ষা হালকা। জলীয় বাষ্প বেশি থাকলে ওই আর্দ্র বায়ুতে নাইট্রোজেনের তুলনায় হাইড্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, ফলে বায়ুর চাপ কমে। এই কারণে বর্ষাকালে বায়ুর চাপ কম হয়। উভয়ের মধ্যে ব্যস্তানুপাতিক সম্পর্ক বিদ্যমান। উদাহরণ— শীতকালে বায়ুর চাপ বেশি হয়, যেহেতু বায়ুতে জলীয় বাষ্প থাকে না (শুষ্ক বায়ু)। অন্যদিকে, বর্ষাকালে বায়ুতে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় বায়ুর চাপ কম হয়।
আরও পড়ুন:-
- বায়ুচাপ বলয় বলতে কি বোঝায়? বিভিন্ন বায়ুচাপ বলয়ের ব্যাখা।
- বায়ুপ্রবাহ (Wind) কি? | বায়ুপ্রবাহ কয় প্রকার ও কি কি?
- আবহবিকার কাকে বলে? যান্ত্রিক আবহবিকার ও রাসায়নিক আবহবিকার
- নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরুপ | নদীর ক্ষয়কার্য কাকে বলে
3) উচ্চতা : বায়ুমণ্ডলের শতকরা প্রায় 90 ভাগ উপাদানই যেহেতু ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 16 কিমি উচ্চতার মধ্যে অবস্থান করে, তাই ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন অঞ্চলে বায়ুর চাপ বেশি হয়। তাই আমরা বায়ুর চাপ অনুভব করি। কিন্তু ভূপৃষ্ঠ থেকে যতই উপরে ওঠা যায় ততই বায়ুর ঘনত্ব কমে। ফলে, চাপও কম হয়।
উদাহরণস্বরূপ প্রতি 274 মিটার উচ্চতায় 34 মিলিবার বায়ুর চাপ কমে যায়। এই কারণে সমভূমি অপেক্ষা পার্বত্য অঞ্চলে বায়ুর চাপ কম হয়।
4) পৃথিবীর আবর্তন গতি : পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্য কোরিওলিস বলের (কেন্দ্রমুখী ও কেন্দ্রবহির্মুখী) সৃষ্টি হয়। কেন্দ্র বহির্মুখী বলের ( Centrifugal Force ) প্রভাবে বায়ু ছিটকে বাইরের দিকে চলে যেতে চায় এবং সে কারণে বায়ুর চাপের তারতম্য হয়।
উদাহরণ নিরক্ষীয় অঞ্চলে পৃথিবীর আবর্তন বেগ বেশি বলে এখানে যেমন নিম্নচাপ পরিলক্ষিত হয় তেমনি উভয় মেরু অঞ্চলে আবর্তন বেগ কম হওয়ায় বায়ুর উচ্চচাপ পরিলক্ষিত হয়।
5) বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব বা গভীরতা : বায়ুমণ্ডলের গভীরতা সর্বত্র সমান নয়। পৃথিবীপৃষ্ঠের যে স্থানে বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব বা গভীরতা বেশি, সেখানে বায়ুর চাপ অপেক্ষাকৃত বেশি। অপরদিকে কম ঘনত্ব বা গভীরতাযুক্ত স্থানে বায়ুর চাপ কম হয়।
উদাহরণ— উত্তর ভারতের সমভূমির চেয়ে তিব্বত মালভূমির বায়ুর গভীরতা ও ঘনত্ব কম। সেইজন্য ওই অঞ্চলে বায়ুর চাপও কম।
6) বায়ুমণ্ডলের গঠনকারী উপাদান : যেসব স্থানের বায়ুতে ধূলিকণা, বালুকণা, কার্বন কণার মতো ভারী উপাদান থাকে, সেখানে বায়ুর চাপ অধিক হয়। আবার হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, ওজোন প্রভৃতি হালকা গ্যাসের আধিক্যযুক্ত অঞ্চলের বায়ুচাপ কম হয়।
7) সমুদ্র ও স্থলভাগের বিন্যাস : পৃথিবীপৃষ্ঠে জলভাগ ও স্থলভাগের বিন্যাস বা বণ্টনের ওপর বায়ুর চাপ অনেকটা নির্ভর করে। সমুদ্রের ওপর দিয়ে যে বায়ু প্রবাহিত হয়, সেই বায়ু সাধারণত আর্দ্র ও হালকা হয় এবং আর্দ্র বায়ুর চাপ কম থাকে। অন্যদিকে, স্থলভাগের ওপর দিয়ে যে বায়ু প্রবাহিত হয়, তা শুষ্ক ও ভারী হয়, ফলে তার চাপও অধিক হয়।
8) অভিকর্ষজ টান : অভিকর্ষজ টান বায়ুচাপের তারতম্যের কারণ হিসাবে ধরা হয়। পৃথিবীর যে স্থান কেন্দ্রের যত নিকটবর্তী সেই স্থানে অভিকর্ষজ টানের প্রভাব ততই বেশি। পৃথিবী অভিগত গোলকাকৃতি হওয়ায় মেরু অঞ্চলে বায়ুর চাপ বেশি এবং নিরক্ষীয় অঞ্চলে বায়ুর চাপ কম।
Very nice 👍👍👍👍👍👍
সংক্ষেপে বায়ুর চাপের তারতম্যের কারণ লেখো