ভৌত বিজ্ঞানের আগের পর্বে আমরা আলোচনা করেছি পদার্থের ভৌত ধর্ম সম্পর্কে। আজকের পোস্ট টিতে আমরা আলোচনা করবো পদার্থের রাসায়নিক ধর্ম সম্পর্কে, জানবো রাসায়নিক ধর্ম কাকে বলে?, পদার্থের রাসায়নিক ধর্মের উদাহরণ, পদার্থের রাসায়নিক ধর্ম গুলি কি কি ইত্যাদি।
পদার্থের রাসায়নিক ধর্ম কাকে বলে ?
রাসায়নিক ধর্ম (Chemical properties): যেসব ধর্ম থেকে পদার্থের মূল গঠনের এবং রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের পরিচয় পাওয়া যায়, সেইসব ধর্মকে পদার্থের রাসায়নিক ধর্ম বলে।
রাসায়নিক ধর্মের সাহায্যে পদার্থের শনাক্তকরণ: রাসায়নিক ধর্মের সাহায্যে কোনো পদার্থকে শনাক্ত করতে হলে পদার্থের ওপর বায়ু, জল, তাপপ্রয়োগ, তড়িৎক্রিয়া , অ্যাসিড , ক্ষার বা ক্ষারক , অন্যান্য কতকগুলি পদার্থের সংযোগে পদার্থের গঠনের কী পরিবর্তন হয় এবং কী কী নতুন পদার্থ উৎপন্ন হয় , তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
পদার্থের রাসায়নিক ধর্ম গুলি কি কি?
(i) বায়ুর ক্রিয়া : বাতাসের সংস্পর্শে এসে পদার্থের নানা ধরনের পরিবর্তন হয়। যেমন — আর্দ্র বায়ুতে একটুকরো চকচকে লোহা ফেলে রাখলে মরচে উৎপন্ন হয়। সোনা, রুপো বায়ুতে ফেলে রাখলে কোনো পরিবর্তন হয় না।
(ii) জলের ক্রিয়া : জলের সঙ্গে বিভিন্ন পদার্থের বিক্রিয়া লক্ষ করে পদার্থকে শনাক্ত করা যায়। যেমন — সোডিয়াম বা পটাশিয়াম – এর মতো ধাতু জলের সংস্পর্শে এলেই তীব্র বিক্রিয়া করে প্রচণ্ড তাপ উৎপন্ন করে এবং আগুন জ্বলে ওঠে। একটুকরো সোনা বা রুপোকে জলে ফেললে কোনো পরিবর্তন হয় না।
আরও পড়ুন:-
- পদার্থের ভৌত ধর্ম কাকে বলে? | ভৌত ধর্ম গুলির উল্লেখ করো
- প্লবতা (Buoyancy) কাকে বলে | প্লবতার বৈশিষ্ট্য | প্লবতার সূত্র
- আর্কিমিডিসের নীতি ব্যাখা | আর্কিমিডিসের সূত্রের প্রয়োগ
- জলের ব্যতিক্রান্ত প্রসারণ কি? (Anomalous Expansion of water)
(iii) তাপের প্রভাব : কোনো কোনো পদার্থকে উত্তপ্ত করলে নতুন পদার্থ উৎপন্ন হয়। যেমন — ম্যাগনেশিয়াম ফিতাকে উত্তপ্ত করলে উজ্জ্বল সাদা শিখাসহ জ্বলে। বাতাসের অক্সিজেন ও নাইট্রোজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ম্যাগনেশিয়াম অক্সাইড ও সামান্য পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম নাইট্রাইড উৎপন্ন হয়। প্ল্যাটিনাম তারকে উত্তপ্ত করলে তারটি উত্তপ্ত হয়ে আলো বিকিরণ করে এবং ঠান্ডা হলে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে।
(iv) অ্যাসিডের ক্রিয়া : কতকগুলি পদার্থের সঙ্গে অ্যাসিডের বিক্রিয়া ঘটে। আবার কোনো কোনো পদার্থ অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে না। যেমন — জিংক লঘু সালফিউরিক অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে হাইড্রোজেন গ্যাস নির্গত করে। কিন্তু সোনা, রুপো , তামা লঘু অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে না।
(v) ক্ষার বা ক্ষারকের ক্রিয়া : পদার্থের উপর ক্ষারের ক্রিয়া লক্ষ করে পদার্থকে শনাক্ত করা যায়। যেমন — ক্ষারের সঙ্গে জিংক বা অ্যালুমিনিয়াম ধাতুর বিক্রিয়ায় হাইড্রোজেন গ্যাস নির্গত হয়। তামা, লোহা ক্ষারের সঙ্গে কোনো বিক্রিয়া করে না।
(vi) তড়িৎক্রিয়া : তড়িৎপ্রবাহের ফলে কিছু কিছু রাসায়নিক বিক্রিয়া লক্ষ করে পদার্থ শনাক্ত করা যায় । যেমন — অ্যাসিড বা ক্ষার মিশ্রিত জলের মধ্যে দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত করলে জল হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনে বিশ্লিষ্ট হয়।
আমাদের লিখিত post গুলি আপনাদের ভালো লাগল অবসই share করুন আমাদের সাথে। আমাদের blog a লেখা পাঠানোর জন্য যোগাযোগ করুন [email protected]
Pingback: রাসায়নিক বিক্রিয়া কাকে বলে, রাসায়নিক বিক্রিয়ার কারণ ও বৈশিষ্ট্য – Studious
Pingback: বয়েলের সূত্র (Boyle's Law) | বয়েলের সূত্র গাণিতিক রূপ – Studious