Skip to content

অবাধে পতনশীল (falling bodies) বস্তুর সূত্র | পতনশীল বস্তু কাকে বলে?

অবাধে পতনশীল বস্তুর সূত্র

পতনশীল বস্তু কি? অবাধে পতনশীল বস্তুর সূত্রগুলি কি কি, পড়ন্ত বস্তুর প্রথম সূত্র কি,  পড়ন্ত বস্তুর ২য় সূত্র ব্যাখ্যা, বিজ্ঞানী গ্যালিলিও এর অবাধে পতনশীল বস্তু, গিনি ও পালক পরীক্ষা এইসব নিয়েই আজকের আমাদের এই পোস্ট টি। সুতরাং দেরি না করে শুরু করা যাক

পতনশীল বস্তু বলতে কী বোঝায় ?

পতনশীল বস্তু Falling body) : পৃথিবীর টানে কোনো বস্তু পৃথিবীর দিকে পড়তে থাকলে, তাকে পতনশীল বস্তু বলে।

অভিকর্ষের প্রভাবে অবাধে পতনশীল, বস্তুর গতিবিধি পর্যালোচনা করে বিখ্যাত ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী গ্যালিলিয়ো গ্যালিলাই তিনটি বিখ্যাত সুত্রের অবতারণা করেন, যেগুলি সাধারণভাবে পতনশীল বস্তু র সূত্র বলে পরিচিত।

অবাধে পতনশীল বস্তু র সূত্রগুলি হল

(i) প্রথম সূত্র: শূন্যস্থানে একই উচ্চতা ও স্থির অবস্থা থেকে পতনশীল সকল বস্তু সমান দ্রুততার সঙ্গে নীচে নামে।

(ii) দ্বিতীয় সূত্র : স্থির অবস্থা থেকে অবাধে পতনশীল বস্তুর বেগ বস্তুর পতনকালের সমানুপাতিক। ওই বস্তুটি t সময়ে , স্থিরাবস্থা থেকে গতিশীল হলে বস্তু কর্তৃক অর্জিত বেগ হয় v অর্থাৎ, v∞t

(iii) তৃতীয় সূত্র : স্থির অবস্থা থেকে অবাধে পতনশীল বস্তু দ্বারা নির্দিষ্ট সময়ে অতিক্রান্ত দূরত্ব বস্তুর পতনকালের বর্গের সমানুপাতিক। অবাধে পতনশীল বস্তু t সময়ে স্থিরাবস্থা থেকে উল্লম্ব দূরত্ব h অতিক্রম করলে , h∞t²

ব্যাখ্যা ও আলোচনা :

প্রথম সূত্র অনুযায়ী, সমান দ্রুততায় নামার অর্থ , ত্বরণ সমান হওয়া। তার ফলে একই সময়ে একই উচ্চতা থেকে পতনশীল বিভিন্ন বস্তুর পতনকাল একই হওয়া উচিত। সাধারণ অভিজ্ঞতায় দেখা যায় , হালকা বস্তুর তুলনায় ভারী বস্তু অনেক তাড়াতাড়ি নীচের দিকে পড়ে। ফলে প্রথম সূত্রের সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ জাগে। কিন্তু গ্যালিলিয়ো পিসা শহরের হেলানো মিনার থেকে বিভিন্ন ওজনের বস্তু ফেলে প্রমাণ করে দেখান, সকল বস্তুই এক দ্রুততায় নীচে পড়ে। তাঁর ব্যাখ্যা অনুযায়ী , ভারী ও হালকা বস্তুর পতনকালের সামান্য পার্থক্য বায়ুর বাধার জন্য হয়।

দ্বিতীয় সূত্র অনুযায়ী , v∞t বা , v/t = ধ্রুবক। যেহেতু বেগের পরিবর্তনের হারই হল ত্বরণ সুতরাং, দ্বিতীয় সূত্র থেকে বোঝা যায় যে, অবাধে পতনশীল বস্তুর ত্বরণ স্থির থাকে।

তৃতীয় সূত্র থেকেও দেখা যায় , h∞t²। গণনালব্ধ ফলাফল থেকে পাওয়া যায় , দ্বিতীয় সূত্রের ক্ষেত্রে সমানুপাতিক ধ্রুবকটির মান সরাসরি সংশ্লিষ্ট স্থানের অভিকর্ষজ ত্বরণের মানের সঙ্গে এবং তৃতীয় সূত্রের ক্ষেত্রে সেটি অভিকর্ষজ ত্বরণের মানের অর্ধেকের সঙ্গে সমান হয়।

**জেনে রাখো : বিজ্ঞানী নিউটন তাঁর বিখ্যাত গিনি ও পালক পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণ করে দেখান যে, স্থির অবস্থা থেকে অবাধে পতনশীল সকল বস্তুই সমান দ্রুততায় নীচে নামে। তাই তিনি স্টপককযুক্ত 1 মিটার লম্বা একটি কাচ নিয়ে একটি গিনি ও পালককে তার মধ্যে প্রবেশ করা। বায়ুপূর্ণ অবস্থায় কাচনলটি হঠাৎ উলটে দিলে দেখা যায়, গিনিটি পালকের অনেক আগেই অপর প্রান্তে পৌঁছে যায়। কারণ পালকের ওপর প্রযুক্ত বায়ুর বাধা অনেক বেশি হওয়ায় পালকের অপর প্রান্তে পৌঁছোতে বেশি সময় লাগে। এবার বায়ু নিষ্কাশন পাম্পের সাহায্যে নলের ভিতরের সব বায়ু বের করে স্টপককটি বন্ধ করে নলটি উলটে দিলে দেখা যায, বায়ুর বাধা না থাকায় গিনি ও পালক একই সঙ্গে নলের অপর প্রান্তে পৌঁছেছে।

 

Share this

Related Posts

Comment us

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook Page