হ্যালো বন্ধুরা, আমরা আজ এই পোস্টটি তে শেয়ার করবো একটি সুন্দর টপিক, টপিক টি হলো ব্রাউনীয় গতি বা ব্রাউনীয় মোসণ, (brownian motion), ব্রাউনীয় গতি কাকে বলে?, জানবো ব্রাউনীয় গতির বৈশিষ্ট্য, এবং ব্রাউনীয় গতি র ব্যাখ্যা
ব্রাউনীয় গতি (Brownian Motion) কি?
ব্রিটিশ উদ্ভিদ বিজ্ঞানী রবার্ট ব্রাউন (Robert Brown) জলে পরাগরেণু (pollen grain) মিশিয়ে দিয়ে শক্তিশালী অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে রেণুগুলির গতি লক্ষ করেন। তিনি দেখেন যে পরাগরেণুগুলি এলোমেলোভাবে চারদিকে নিরবচ্ছিন্নভাবে ছোটাছুটি করছে। পরবর্তীকালে দেখা যায়, কোনো তরল বা গ্যাসীয় পদার্থের মধ্যে পরাগরেণুর মতো সূক্ষ্ম কণা ভাসিয়ে দিলে কণা গুলিতে একইরকম অনিয়মিত গতির সৃষ্টি হয়। কণাগুলি নিরন্তর কখনও নীচের দিকে, কখনও ওপরের দিকে, কখনও বা বামে, কখনও ডাইনে যাতায়াত করছে; আবার কখনও ঘুরপাক খাচ্ছে। তরল বা গ্যাসের মধ্যে ভাসন্ত ( suspended ) সূক্ষ্ম কণার এ ধরনের অবিরাম অনিয়মিত গতিকে ব্রাউনীয় গতি বলা হয়।
ব্রাউনীয় গতির বৈশিষ্ট্য
ব্রাউনীয় গতি র বৈশিষ্ট্য : বিভিন্ন বিজ্ঞানী নানা পরীক্ষার সাহায্যে ব্রাউনীয় গতির নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি লক্ষ করেন।
(i) এই গতি স্বতস্ফূর্ত , চিরস্থায়ী , নিরবচ্ছিন্ন এবং এলোমেলো। দুটি কণার গতি কখনোই একইরকম হয় না। এমনকি খুব কাছাকাছি দুটি কণার গতিও একরকম নয়।
(ii) পাত্রের নড়াচড়ার ওপর এই গতি নির্ভর করে না।
(iii) উন্নতা বৃদ্ধিতে কণাগুলির বেগ বৃদ্ধি পায়।
(iv) কণাগুলি যত ক্ষুদ্র হয় এদের বেগ তত বৃদ্ধি পায়।
(v) মাধ্যমের সান্দ্রতা (viscosity) যত কম হয় কণাগুলির বেগও তত বেশি হয়।
(vi) ভাসন্ত কণাগুলির রাসায়নিক প্রকৃতির ওপর এই গতি নির্ভর করে না।
আরও পড়ুন:
- গ্যাসের গতীয় তত্ত্বের স্বীকার্য : আদর্শ গ্যাস ও বাস্তব গ্যাস
- অবাধে পতনশীল (falling bodies) বস্তুর সূত্র | পতনশীল বস্তু কাকে বলে?
- টিন্ডাল প্রভাব কি? | টিন্ডাল প্রভাব দেখা যায় কোন দ্রবণে
- কোলয়েডীয় দ্রবণ | প্রকৃত দ্রবণ | প্রলম্বন কি?
ব্রাউনীয় গতির ব্যাখ্যা / ব্রাউনীয় গতির কারণ কি
ব্রাউনীয় গতির ব্যাখ্যা : ব্রাউনীয় গতি আবিষ্কারের পর প্রথম দিকে বিজ্ঞানীরা মনে করেছিলেন যে এই গতির কারণ হল রাসায়নিক বিক্রিয়া, অনিয়মিত উষ্ণতার পরিবর্তন, তরলের পৃষ্ঠটান ( surface tension ) ইত্যাদি। কিন্তু নানারকম পরীক্ষা থেকে প্রমাণিত হয় যে এইসব ব্যাখ্যা ঠিক নয়। গতীয় তত্ত্বের সাহায্যে ব্রাউনীয় গতির সঠিক ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব হয়। আমরা জানি, তরল বা গ্যাসের অণুগুলি সর্বদা এলোমেলোভাবে ছুটছে, ফলে ভাসন্ত কণাগুলির (যেমন ধূলিকণাগুলির) সঙ্গে এদের অনবরত সংঘর্ষ ঘটছে। ভাসন্ত কণাগুলিকে সবসময় চারদিক থেকে তরল কিংবা গ্যাসের অণুগুলি ধাক্কা মারে। তাই ভাসন্ত কণাটি আকারে বড়ো হলে অণুগুলির আঘাত কণার ওপর সবদিক থেকে সমানভাবে পরে। এর ফলে কণাটির ওপর লব্ধি বল শূন্য হয় বলে কণাটি স্থির থাকে। এই কারণেই জলে ভাসমান কাঠের টুকরো বা অন্য কোনো ভাসমান বস্তুতে ব্রাউনীয় গতি দেখা যায় না। কিন্তু ভাসন্ত কণাটি আকারে খুব ক্ষুদ্র হলে এর ওপর অণুগুলির আঘাত চারদিকে থেকে সমানভাবে পড়ে না। এর ফলে একটি লব্ধি বল পাওয়া যায় এবং কণাটি লব্ধি বলের অভিমুখে গতিশীল হয়। আণবিক সংঘাতগুলি বিশৃঙ্খল বা এলোমেলো বলে লব্ধি বলের মান সর্বত্র এবং সবসময় সমান নয়, বা লব্ধি বলের অভিমুখও সবসময় এক দিকে হয় না। তাই কণাটি অনিয়মিতভাবে এদিক – ওদিক ছোটাছুটি করে। কণাগুলি যত আকারে ছোটো হয়, ক্রিয়াশীল লব্ধি বলের মান তত বৃদ্ধি পেয়ে কণার গতিকে তীব্রতর করে। উষ্ণতা বৃদ্ধি করলে অণুগুলির তাপীয় গতি বাড়ে। ফলে কণাগুলির ওপর ক্রিয়াশীল বল বৃদ্ধি পায় এবং কণাগুলির গতিও বেড়ে যায়।
Covered Topics: ব্রাউনীয় ব্রাউনীয় মোসণ, (brownian motion), ব্রাউনীয় গতি কাকে বলে?, জানবো ব্রাউনীয় গতির বৈশিষ্ট্য, এবং ব্রাউনীয় গতির ব্যাখ্যা, Image source- byjus.com
Thanks sir
Pingback: চার্লসের সূত্র (Charles' Law) | চার্লসের সূত্রের ব্যাখা ও গাণিতিক রূপ – Studious
Sir please send the quotation