নমস্কার প্রিয় পাঠকেরা, ইতিহাসের আগের পোস্ট গুলিতে আমরা আলোচনা করেছি বিভিন্ন বিদ্রোহ সম্পর্কে, আজও আমাদের সেই পর্বই চলছে, এবং আজ আমরা আলোচনা করবো রংপুর বিদ্রোহ করবো, জানবো রংপুর বিদ্রোহের কারণ, রংপুর বিদ্রোহের বিস্তার, রংপুর বিদ্রোহের গুরুত্ব ইত্যাদি।
ভূমিকা : ১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে বাংলার রংপুরের কৃষকরা ইজারাদার দেবী সিংহের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল, তা রংপুর বিদ্রোহ (Rangpur Revolt) নামে পরিচিত। অধ্যাপক নরহরি কবিরাজ বলেছেন যে, ১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ ছিল একটি সফল কৃষক অভ্যুত্থান। রংপুর বিদ্রোহের প্রধান নেতা ছিলেন নুরুলউদ্দিন।
রংপুর বিদ্রোহের কারণ :
1) ইজারাদার দেবী সিংহের অত্যাচার : ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে দিনাজপুরের রাজা হন নাবালক রাধানাথ সিংহ। বাংলার গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস দেবী সিংহ নামে এক ব্যক্তিকে তাঁর দেওয়ান নিযুক্ত করেন। দেবী সিংহ বার্ষিক ১৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে দিনাজপুর, রংপুর ও এদ্রাকপুর পরগনার ইজারা নেন। এরপর ইজারাদার হয়ে দেবী সিংহ স্থানীয় জমিদার ও কৃষকদের উপর অত্যধিক হারে রাজস্ব ধার্য করেন। তার অত্যাচারে ওই অঞ্চলের প্রজারা জর্জরিত হয়ে ওঠে।
2) জমিদারি বাজেয়াপ্ত : নির্দিষ্ট সময়ে রাজস্ব দিতে না পারার জন্য জয়দুর্গা চৌধুরাণী, বামনডাঙার জমিদার জগদীশ্বরী চৌধুরাণী, টেপাগ্রামের জমিদার – সহ অনেক জমিদারের জমিদারি বাজেয়াপ্ত করা হয়।
রংপুর বিদ্রোহের বিস্তার
বিদ্রোহ প্রথমে শুরু হয় রংপুরের টেপা, তিমলা, ফতেপুর, রুজিরহাট প্রভৃতি অঞ্চলে। বিদ্রোহীরা তাদের মধ্য থেকে নুরুলউদ্দিনকে ‘ নবাব ’ এবং দয়ারাম শীল নামে আর – এক ব্যক্তিকে ‘ নবাবের দেওয়ান’রূপে ঘোষণা করে। হিন্দু – মুসলিম সকল কৃষকদের এই ঐক্যবদ্ধ ও বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম দ্রুত দিনাজপুর ও কোচবিহার জেলাতেও বিস্তার লাভ করে।
আরও পড়ুন:
- সিপাহী বিদ্রোহ 1857 (মহাবিদ্রোহ) | সিপাহী বিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল
- সাঁওতাল বিদ্রোহ | সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ | বৈশিষ্ট্য ও প্রকৃতি | সাঁওতাল বিদ্রোহের ফলাফল ও গুরুত্ব
- নীল বিদ্রোহ (Indigo Revolt) | নীল বিদ্রোহের কারণ, গুরুত্ব, ফলাফল
- মুন্ডা বিদ্রোহ | মুন্ডা বিদ্রোহের কারণ | মুন্ডা বিদ্রোহের ফলাফল
রংপুর বিদ্রোহ দমন
এমতাবস্থায় বিদ্রোহ দমনে ইংরেজরা সেনাবাহিনীর সাহায্য নেয়। পাটগ্রামের যুদ্ধে নুরুলউদ্দিন আহত হয়ে বন্দি হন, পরে মৃত্যুবরণ করেন। দয়ারাম শীলও নিহত হন। শেষপর্যন্ত বিদ্রোহীদের উপর প্রচণ্ড অত্যাচার চালিয়ে ১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে এই বিদ্রোহ দমন করা হয়
রংপুর বিদ্রোহের গুরুত্ব
ব্রিটিশবিরোধী বিদ্রোহ : রংপুর বিদ্রোহ একটি আঞ্চলিক বিদ্রোহ হিসেবে শুরু হলেও এটি ক্রমশ ব্রিটিশবিরোধী বিদ্রোহে পরিণত হয়।
ইজারাদারি প্রথার কুফলগুলির প্রকাশ : ইজারাদারি প্রথা যে কত ভয়ংকর হতে পারে এই বিদ্রোহের ফলে তা প্রকাশ পেয়েছিল।
Covered Topics: রংপুর বিদ্রোহ কেনো হয়েছিল, রংপুর বিদ্রোহের কারণ, রংপুর বিদ্রোহের বিস্তার, রংপুর বিদ্রোহের গুরুত্ব ইত্যাদি, রংপুর বিদ্রোহের নেতার নাম।
good post
গুড পোস্ট