মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক Class 9 Part 7 বাংলা
১. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও : ৩×৫=১৫
১.১ ‘নব নব সৃষ্টি’ প্রবন্ধে বাংলা সাহিত্যে বিদেশি শব্দ ব্যবহারের যে সকল দৃষ্টান্ত লক্ষ করা যায় তা উল্লেখ করো।
উত্তর– প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘নব নব সৃষ্টি’ প্রবন্ধে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাংলা সাহিত্যে বিদেশি ব্যবহারের কয়েকটি চমৎকার দৃষ্টান্ত তুলে তিনি জানিয়েছেন-
(ক) রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং তাঁর সাহিত্যে সচ্ছন্দে ব্যবহার করে গেছেন ‘আব্ৰু’, ‘ইজ্জত’,’ইমান’ প্রভৃতি বিদেশি শব্দ।
(খ) বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও তাঁর সাহিত্যের মধ্য দিয়ে বাংলা শব্দ ভান্ডারে ঢুকিয়ে দিয়ে গেছেন— ‘ইনকিলাব’, ‘শহীদ’ এই দুটি বিদেশি শব্দ।
(গ) বিদ্যাসাগর স্বয়ং ছদ্মনামে যে সমস্ত সাহিত্য রচনা করেছিলেন সেখানেও তিনি চুটিয়ে আরবি-ফারসি বিদেশি শব্দের ব্যবহার করে গেছেন।
এছাড়াও, ‘আলালের ঘরে দুলাল’,’হুতোম প্যাঁচার প্রভৃতি গ্রন্থে বিদেশি শব্দের বিপুল ব্যবহার বাংলায় ব্যবহারের দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
১.২ ‘পৃথিবীর কোনো পথ এ কন্যারে দেখে নি কো”— উদ্ধৃতাংশে কোন কন্যার কথা বলা হয়েছে? পৃথিবীর কোনো পথ তাকে দেখেনি কেন ? ১+২
উত্তর– উদ্ধৃতাংশটি কবি জীবনানন্দ দাশ রচিত ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতা থেকে গৃহীত হয়েছে। এই অংশে কবি জীবনানন্দ কন্যা বলতে বুঝিয়েছেন বঙ্গ-প্রকৃতির নীল সন্ধ্যাকে। কবি বঙ্গ-প্রকৃতির নীল সন্ধ্যার সৌন্দর্যকে কোনো কেশবতী কন্যা রূপে দেখেছেন।
কবি জীবনানন্দ দেখেছেন বঙ্গ প্রকৃতির বুকে আগত নীল সন্ধ্যা কোনো কেশবতী নাম প্রকৃতির সৌন্দর্যের কথা মনে করিয়ে দেয়। নারীর চুলের স্পর্শ যেমন যে কোনো মানুষ অনুভব করতে পারে, ঠিক তেমনই কবি বাংলার এই নীল সন্ধ্যার বিরল স্পর্শ অনুভব করে মুগ্ধ হন। কবি পৃথিবীর অনেক স্থান ঘুরেছেন, পৃথিবীর অনেক স্থানে তিনি সন্ধ্যা দেখেছেন, কিন্তু বঙ্গ-প্রকৃতি ছাড়া সন্ধ্যার এই নারীময় রূপ-সৌন্দর্য তিনি আর কোথাও দেখেননি, উপভোগ করতে পাননি। তাই কবির দৃঢ় বিশ্বাস বঙ্গ-প্রকৃতি ছাড়া, পৃথিবীর কোনো পথে কন্যা-স্বরূপ নীল সন্ধ্যাকে দেখতে পাওয়া অসম্ভব।
১.৩ ….তুমি ঠিক সেইরূপ নারী, যাকে আজ প্রয়োজন। কাকে একথা লেখা হয়েছে ? তাঁকে কেন প্রয়োজন ? ১+২
উত্তর– উদ্ধৃতাংশটি স্বামী বিবেকানন্দ রচিত ‘চিঠি’ নামক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত হয়েছে। উদ্ধৃতাংশটি স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর অন্যতম শিষ্যা কল্যাণীয়া মিস মার্গারেট এলিজাবেথ নোবল কে উদ্দেশ্য করে অর্থাৎ ভগিনী নিবেদিতাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন।
স্বামী বিবেকানন্দ জানিয়েছেন সমাজ-শিক্ষা-সভ্যতা সব স্তরে নারীরা ভারতবর্ষে বঞ্চিত। এই পুরুষশাসিত সমাজের বুকে দাঁড়িয়ে নারীদের মুক্তি, শিক্ষা এবং কল্যাণের জন্য একজন সিংহা-স্বরূপ নারীর প্রয়োজন। স্বামীজি মিস নোবল-এর মধ্যে নারীর সিংহী-স্বরূপ সমস্ত গুণ- পবিত্রতা, শিক্ষা, ঐকান্তিকতা সমস্তই দেখতে পেয়েছিলেন। তাই স্বামীজি ভারতবর্ষে নারী কল্যাণের জন্য,পুরুষশাসিত সমাজে নারীর অধিকার ছিনিয়ে আনার জন্য মিস নোবল-এর মতোই যোগ্য নারীর প্রয়োজন অনুভব করেছিলেন।
১.৪ ‘সারাটা দিন আপন মনে ঘাসের গন্ধ মাখো —কে এমনটি করে থাকে ? তার এমন করার কারণ কী ? ১+২
উত্তর– উদ্ধৃতাংশটি কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী রচিত ‘আবহমান’ কবিতা থেকে গৃহীত হয়েছে।
নিজের প্রাচীন জন্মভূমি অর্থাৎ গ্রামীণ বঙ্গ -প্রকৃতিকে ত্যাগ করে যে সমস্ত মানুষজন কর্মসূত্রে শহরে চলে মানুষজ ব যান সেই মানুষদের কথাই উক্ত কবিতাংশে বলা হয়েছে।
কবি জানিয়েছেন, যে-সমস্ত মানুষজন। গ্রামীণ বঙ্গ-প্রকৃতির কোলে জন্মগ্রহন করে কর্মসতে শহরে চলে
১.৫ ‘রাধারাণী কাঁদিতে কাঁদিতে কতকগুলি বনফুল তুলিয়া তাহার মালা গাঁথিল’। —রাধারাণীর পরিচয় দাও। তার মালা গাঁথার উদ্দেশ্য কী ? ১+২
উত্তর– উদ্ধৃতাংশটি সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘রাধারানী’ পাঠ্যাংশ থেকে গৃহীত হয়েছে। রাধারানী পাঠ্যাংশ থেকে যায় রাধারানী দশ-এগারো বছরের এক বালিকা বাড়ি শ্রীরামপুর। সে পিতৃহীনা। একদা ধনীর মেয়ে হওয়া সত্বেও বর্তমানে চরম দরিদ্রগ্রস্থ।
একদা ধনীর মেয়ে হওয়া সত্বেও রাধারানীদের জীবন ছিল চরম দরিদ্রগ্রস্থ। কোনক্রমে কায়িক শ্রম দ্বারা কোনক্রমে অন্নসংস্থান করতেন। কিন্তু হঠাৎ রাধারানীর মা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় আহার এবং মায়ের পথ্য সংস্থানের সমস্যা তৈরি হয়। রথের দিন রাধারানীর মায়ের অসুস্থতা বাড়ে। ওষুধ এবং খাবার কেনার একান্ত প্রয়োজনে নিরুপায় রাধারানী কয়েকটি বনফুল কুড়িয়ে রাধারান এনে মালা গাঁথে। সেই মালা সে বিক্রির উদ্দেশ্যে মাহে মালা সে মেলায় নিয়ে যায় যাতে দু-একটি পয়সা পেলে পড়ে পথ্য এবং ন্যূনতম আহারের সংস্থান করতে পারে।
২. নীচের ব্যাকরণগত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও : ১ x ৫ = ৫
২.১ ‘কেরোসিন’ উৎসগতভাবে কোন শ্রেণির শব্দ ?
উত্তর– কেরোসিন- শব্দটি ইংরাজী ভাষা থেকে গৃহীত হয়েছে। অর্থাৎ, উৎসগত দিক থেকে এটি বিদেশি আগন্তুক শব্দ।
২.২ একটি মৌলিক শব্দের উদাহরণ দাও।
উত্তর– একটি মৌলিক শব্দের উদাহরণ হলো, পা।
২.৩ ‘নবগঠিত শব্দ’ বলতে কী বোঝ ?
উত্তর– যে সমস্ত শব্দ একাধিক ভাষার শব্দের সংমিশ্রণে অর্থাৎ তৎসম, তদ্ভব, দেশী, বিদেশী শব্দের সাথে অপর কোন শব্দের সংযোগে কিংবা কোনো বিদেশি শব্দের অনুবাদের কারণে সৃষ্টি হয় সেই শব্দগুলিকে নবগঠিত শব্দ বা নবসৃষ্ট শব্দ যেমন- খানাতল্লাশি, ফুলমোজা।
২.৪ পোর্তুগিজ ও হিন্দি ভাষার শব্দ যুক্ত করে তৈরি একটি মিশ্র শব্দের উদাহরণ দাও।
উত্তর– পর্তুগিজ এবং হিন্দি ভাষার শব্দ যোগে একটি মিশ্র শব্দ হলো- পাউরুটি।
২.৫ ‘Tear gas’-এর বাংলায় অনূদিত শব্দটি কী ?
উত্তর– ‘Tear Gas’-এর বাংলা অনুবাদ হলো কাঁদানে গ্যাস