জারণ ক্ষমতা ও বিজারণ ক্ষমতা কি?
জারণ ক্ষমতা ( Oxidising power ) : কোনো মৌলের জারণ ক্ষমতা বলতে ওই মৌলের ইলেকট্রন গ্রহণ করার ক্ষমতাকে বোঝায়। অর্থাৎ, যে মৌল বা আয়নের ইলেকট্রন গ্রহণের প্রবণতা বেশি, তার জারণ ক্ষমতাও বেশি।
বিজারণ ক্ষমতা (Reducing Power)কোনো মৌল বা আয়নের ইলেকট্রন ত্যাগের ক্ষমতা হল বিজারণ ক্ষমতা। ইলেকট্রন বর্জনের প্রবণতা যত বেশি, সেই মৌল বা আয়নের বিজারণ ক্ষমতাও তত বেশি।
জারণ ধর্মের পরিবর্তন
পর্যায় বরাবর মৌলের জারণ ধর্মের পরিবর্তন : পর্যায় সারণিতে পর্যায় বরাবর বামদিক থেকে যত ডানদিকে যাওয়া যায় মৌলগুলির জারণ ক্ষমতা ক্রমশ বাড়তে থাকে। কারণ পরমাণুর আকার ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে। ফলে , সর্ববহিস্থ কক্ষের ইলেকট্রনগুলির ওপর নিউক্লিয় আকর্ষণ বল (Nuclear pull) বৃদ্ধি পেতে থাকে। উদাহরণ – দ্বিতীয় পর্যায়ের মৌলগুলির জারণ ক্ষমতার ক্রম – Li < Be < B < C < N < O < F
শ্রেনি বরাবর মৌলের জারণ ধর্মের পরিবর্তন : শ্রেণি বরাবর উপর থেকে নীচের দিকে নামলে মৌলগুলির জারণ ক্ষমতা ক্রমশ কমতে থাকে। কারণ শ্রেণি বরাবর উপর থেকে নীচের দিকে গেলে নিউক্লিয় আধান বৃদ্ধি পেলেও নতুন মুখ্যশক্তিস্তরের সংযোজন হওয়ায় নিউক্লিয়াস থেকে সর্ববহিস্থ কক্ষের দূরত্ব ক্রমশ বাড়তে থাকে, সঙ্গে সঙ্গে পরমাণুর আকারও ক্রমশ বাড়তে থাকে। ফলে, সর্ববহিস্থ কক্ষের ইলেকট্রনগুলির ওপর নিউক্লিয় আকর্ষণ বল ক্রমশ শিথিল হয়। তাই পরমাণুর ইলেকট্রন গ্রহণ করার প্রবণতা ক্রমশ কমতে থাকে। উদাহরণ – IA বা 1 নং শ্রেণির মৌলগুলির জারণ ক্ষমতার ক্রম হল – Li > Na > K > Rb>Cs।
আরও পড়ুন:
- ডোবেরাইনার ত্রয়ী সূত্র | ডোবেরাইনার ত্রয়ী সূত্র টি লেখ ও ব্যাখ্যা কর
- তড়িৎ ঋণাত্মকতা (Electronegativity) কাকে বলে | তড়িৎ ঋণাত্মকতা কি
- মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণি (Mendeleev’s periodic table)
- আধুনিক পর্যায় সারণি | আধুনিক পর্যায় সূত্র টি লেখ
বিজারণ ধর্মের পরিবর্তন
পর্যায় বরাবর মৌলের বিজারণ ধর্মের পরিবর্তন : পর্যায় বরাবর মৌলের বিজারণ ক্ষমতা কমতে থাকে। কারণ–পর্যায় বরাবর মৌলগুলির পরমাণু – ক্রমাঙ্ক তথা নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক আধান বৃদ্ধি পায় ফলে সর্ববহিস্থ কক্ষের ইলেকট্রনগুলির ওপর নিউক্লিয় আকর্ষণ বল (Nuclear pull) বৃদ্ধি পেতে থাকেসেই সঙ্গে পরমাণুর ইলেকট্রন বর্জন করার প্রবণতা ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে। অর্থাৎ, বিজারণ ক্ষমতা হ্রাস পায়। এবং বিজারণ ক্ষমতার ক্রম Li > Be > B > C > N > O > F
শ্রেনি বরাবর মৌলের বিজারণ ধর্মের পরিবর্তন: শ্রেণি বরাবর উপর থেকে নীচের দিকে নামলে মৌলগুলির বিজারণ ক্ষমতা ক্রমশ বাড়তে থাকে। কারণ শ্রেণি বরাবর উপর থেকে নীচের দিকে গেলে নিউক্লিয় আধান বৃদ্ধি পেলেও নতুন মুখ্যশক্তিস্তরের সংযোজন হওয়ায় নিউক্লিয়াস থেকে সর্ববহিস্থ কক্ষের দূরত্ব ক্রমশ বাড়তে থাকে, সঙ্গে সঙ্গে পরমাণুর আকারও ক্রমশ বাড়তে থাকে। ফলে, সর্ববহিস্থ কক্ষের ইলেকট্রনগুলির ওপর নিউক্লিয় আকর্ষণ বল ক্রমশ শিথিল হয়। তাই পরমাণুর ইলেকট্রন বর্জন করার প্রবণতা ক্রমশ বাড়তে থাকে অর্থাৎ, বিজারণ ক্ষমতা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। বিজারণ ক্ষমতার ক্রম হল – Li < Na < K < Rb < Cs