Skip to content

নিউক্লিয় বিভাজন (Neuclear fission) কাকে বলে? | নিউক্লিয়ার ফিশন ও ফিউশন বিক্রিয়ার পার্থক্য

নিউক্লিয় বিভাজন কাকে বলে

আমরা ভৌতবিজ্ঞানের এই অধ্যায়ে জানব নিউক্লিয় বিভাজন ও নিউক্লিয় সংযোজন সম্পর্কে, এই পোস্ট টিতে আলোচনা করব আমার নিউক্লিয় বিভাজন সম্পর্কে, জানব নিউক্লিয় বিভাজন কাকে বলে? নিউক্লিয় বিভাজন কিভাবে ঘটে?, নিউক্লিয় বিভাজনের সমীকরণ ইত্যাদি। সুতরাং শুরু করা যাক।

হিরোসিমা ও নাগাসাকির কথা আমরা সবাই জানি। জাপানের এই দুটি শহরে যথাক্রমে 6 আগস্ট , 1945 ও 9 আগস্ট 1945 – এ পরমাণু বোমা ফেলা হয়েছিল। ওই বোমা ফেলার কয়েক মিনিটের মধ্যে শহরের অর্ধেক নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। এমন বিপুল শক্তি কোথা থেকে এল ? এই শক্তি এসেছে নিউক্লীয় বিভাজন থেকে

নিউক্লিয় বিভাজন কাকে বলে 

নিউক্লিয় বিভাজন হল একধরনের কেন্দ্রক বিক্রিয়া যেখানে কোনো ভারী নিউক্লিয়াস প্রায় সমান ভরের দুটি নিউক্লিয়াসে বিভাজিত হয় এবং কয়েকটি নিউট্রন, y রশ্মি এবং প্রচণ্ড শক্তির উদ্ভব হয়। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখান যে , 235U92 নিউক্লিয়াসকে ধীরগতিসম্পন্ন নিউট্রন দিয়ে আঘাত করলে নিউক্লিয়াসটি নিউট্রন গ্রহণ করে সংযুক্ত নিউক্লিয়াস (compound nucleus) গঠন করে।

 

আরও পড়ুন:

 

নিউক্লিয় বিভাজনে শক্তি উৎপাদন

নিউক্লিয় বিভাজনের ফলে উৎপন্ন পদার্থগুলির মোট ভর মূল ইউরেনিয়াম পরমাণু ও বিক্রিয়ক নিউট্রনের মিলিত ভর অপেক্ষা কম হয়। যে পরিমাণ ভর হ্রাস পায় , তা আইনস্টাইনের E = mc2 সূত্রানুযায়ী শক্তিতে পরিণত হয়। প্রমাণ করা যায় যে মাত্র 1 গ্রাম 235U92-এর প্রতিটি পরমাণু বিভাজিত হলে মুক্ত শক্তির পরিমাণ হয় 7.6×1010 জুল , যা প্রায় 3000 টন কয়লা পোড়ালে যে শক্তি পাওয়া যায় তার সমান।

সেটি অত্যন্ত দুঃস্থিত হওয়ায়, সঙ্গে সঙ্গে দুটি খণ্ডে বিভাজিত হয়। এদের বলা হয় বিভাজন খণ্ড (fission fragments)। বিভাজন খণ্ডগুলি হল বেরিয়াম ( 141Ba56 ) ও ক্লিপটন (92Kr36 )। এর সঙ্গে 3 টি নিউট্রন, y রশ্মি নিঃসৃত হয় এবং প্রচণ্ড শক্তির উদ্ভব হয় (প্রায় 200.6MeV)।

নিউক্লীয় বিভাজনের সমীকরণটি হল—

235U92+1n0 →236 U*92 → 141Ba56 + 92Kr36 + 3 1n0 + 200.6 MeV (প্রায়)

এখানে 235U92 ও একটি নিউট্রনের ভরের সমষ্টি অপেক্ষা 141Ba56, 92Kr36 . ও 3 টি নিউট্রনের ভরের সমষ্টি প্রায় 0.21536.u পরিমাণ কম যা শক্তিতে রূপান্তরিত হওয়ায় প্রায় 200.6 MeV : শক্তি উৎপন্ন হয়। এই নিউক্লীয় বিভাজন বিক্রিয়ায় 3 টি নিউট্রন উৎপন্ন হয়। ওই 3টি নিউট্রন আরও তিনটি 235U92 এর নিউক্লিয়াসকে ভাঙতে পারে। এর ফলে 9টি নিউট্রন উৎপন্ন হবে। ওই 9টি নিউট্রন 9টি 235U92 এর নিউক্লিয়াসকে ‘ভাঙতে পারে। এর ফলে 27 টি নিউট্রন উৎপন্ন হবে এইভাবে ধারাবাহিক বিভাজনকে শৃঙ্খল বিক্রিয়া বলা হয় এবং এইভাবে বিক্রিয়া চলতে থাকলে খুব অল্প সময়ে বিশাল শক্তি পাওয়া সম্ভব। এটিই হল পরমাণু বোমার (Atom bomb) মূলনীতি

পরমাণু বোমার ক্ষতিকর প্রভাব বিশাল। এই ক্ষতি শুধুমাত্র বোমা ফেলার সময়েই হয় তা নয়, এর প্রভাব পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও থেকে যায়। হিরোসিমায় ইউরেনিয়াম পরমাণু বোমা ও নাগাসাকিতে প্লুটোনিয়াম পরমাণু বোমা ফেলা হয়েছিল। প্লুটেনিয়াম বোমার ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা ইউরেনিয়াম বোমার চেয়ে বেশি। বোমার ক্ষমতা এত বেশি ছিল যে নিক্ষেপস্থলের 500 m -এর মধ্যে থাকা 90 % মানুষ সঙ্গে সঙ্গে মারা গিয়েছিল। বোমা ফেলার তিন সপ্তাহ পর থেকে যেসব মানুষ বেঁচে ছিল তাদের বেশিরভাগের মধ্যে চুল ওঠা, অ্যানিমিয়া, রক্তপাত, ডায়েরিয়া প্রভৃতি রোগ দেখা দিয়েছিল। বোমা ফেলার অর্ধশতাব্দী পরেও তার প্রভাবে থাইরয়েড ক্যানসার , ফুসফুসে ক্যানসার বিকলাঙ্গ শিশুর জন্মের মতো সমস্যা রয়ে গেছে।

Share this

Related Posts

Comment us

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook Page