হ্যালো বন্ধুরা আজ আমরা আলোচনা করবো ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ” রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল ” আরও জানবো রাদারফোর্ড পরমাণু মডেলের ত্রুটি, রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল এর বৈশিষ্ট্য, রাদারফোর্ডের পরীক্ষা থেকে কীভাবে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে পরমাণুর অধিকাংশ স্থানই ফাঁকা ইত্যাদি।
রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল
রাদারফোর্ডের পরমাণুর মডেল অনুযায়ী পরমাণুর দুটি অংশ , যথা- পরমাণুর কেন্দ্রক বা নিউক্লিয়াস এবং নিউক্লিয়াসের বাইরের ইলেকট্রন মহল।
কেন্দ্রক বা নিউক্লিয়াস :
সমগ্র পরমাণুর পরমাণুর কেন্দ্রে অতি অল্প স্থানে কেন্দ্রীভূত থাকে একে কেন্দ্রক বা নিউক্লিয়াস বলে ।
পরমাণুর নিউক্লিয়াসে ধনাত্মক আধানযুক্ত প্রােটন কণা অবস্থান করে। তাই পরমাণুর কেন্দ্র বা নিউক্লিয়াস ধনাত্মক হয়। পরমাণুর ব্যাসের তুলনায় নিউক্লিয়াসের ব্যাস অনেক কম হয়। তাই বলা যায় পরমাণু নিরেট নয়, এর বেশিরভাগ অংশই ফাকা।
নিউক্লিয়াসের বাইরের ইলেকট্রন মহল :
নিউক্লিয়াসের বাইরে বিভিন্ন কক্ষপথে ঋণাত্মক তড়িগ্রস্ত ইলেকট্রন কণাগুলি ঘুরতে থাকে। পরমাণুর নিউক্লিয়াসে ঠিক যতগুলি প্রােটন থাকে নিউক্লিয়াসের বাইরেও ঠিক ততগুলি ইলেকট্রন থাকে। প্রােটন ও ইলেকট্রনের মােট আধান সমান ও বিপরীত হবার কারণে পরমাণু নিস্তড়িৎ হয়। রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল অনুসারে, নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে বৃত্তাকার কক্ষপথে ইলেকট্রনগুলি সমদ্রুতিতে নিউক্লিয়াসের চারপাশে আবর্তন করে। নিউক্লিয়াস ও ইলেকট্রনের মধ্যে ক্রিয়াশীল স্থির তড়িতাহিক আকর্ষণ বল ইলেকট্রনকে বৃত্তপথে আবর্তনের জন্য প্রয়ােজনীয় অভিকেন্দ্র বল সরবরাহ করে থাকে।
রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল অনুসারে পরমাণুর বৈশিষ্ট্য
১) পরমাণুর বেশিরভাগ থানই ফাকা।
২) পরমাণুর কেন্দ্রে অতি ক্ষুদ্র স্থানে পরমাণুর সমগ্র ভর এবং ধনাত্মক আধান কেন্দ্রীভূত থাকে।
৩) নিউক্লিয়াসের বাইরে অবস্থানকারী ইলেকট্রনগুলি নিউক্লিয়াসের সঙ্গে স্থির তড়িৎ আকর্ষণ বল দ্বারা আবদ্ধ থাকে।
৪) নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে এক বা একাধিক বৃত্তাকার পথে ইলেকট্রনগুলি প্রচণ্ড গতিতে ঘুরতে থাকে।
৫) নিউক্লিয়াসের মােট ধনাত্মক আধান ও ইলেকট্রনগুলির মােট ঋণাত্মক আধানের মান সমান হয়।
রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলর সীমাবদ্ধতা
রাদারফোর্ড পরমাণুর যে মডেল তৈরি করেছিলেন পরবর্তীতে দেখা যায় সেই মডেল এর কিছু ত্রুটি ছিল। রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল এর ত্রুটি গুলি হলো।
১) রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল অনুসারে নিউক্লিয়াসকে ঘিরে নির্দিষ্ট কক্ষপথে আবর্তনশীল প্রত্যেক ইলেকট্রনের অভিকেন্দ্র ত্বরণ বর্তমান। তড়িৎগতিবিদ্যার তত্ত্ব অনুসারে , আহিত কণা ত্বরণ বা মন্দনসহ গতিশীল হলে ওই কণা তার মধ্যে নিহিত শক্তি নিরবচ্ছিন্নভাবে বিকিরণ করতে থাকে। সুতরাং, এই প্রক্রিয়ায় আবর্তনরত ইলেকট্রনের শক্তি অবিরাম হ্রাস পায় এবং তা নিউক্লিয়াসের আকর্ষণে ক্রমশ কাছে আসতে থাকে। ফলে , ইলেকট্রনটি ক্রমহ্রাসমান ব্যাসার্ধের কুণ্ডলী পথে আবর্তন করতে করতে একসময় নিউক্লিয়াসে গিয়ে আছড়ে পড়ে।
গণনায় দেখা যায় , এ ঘটনা 10^-8 সেকেন্ড সময়ের মধ্যে ঘটা উচিত অর্থাৎ , রাদারফোর্ড পরমাণু মডেল 10^-8 সেকেন্ড এই স্বল্প সময় ব্যবধানের জন্যই স্থায়ী হওয়ার কথা। বাস্তবে অবশ্য পরমাণুকে দীর্ঘসময় ধরে স্থায়ী অবস্থায় পাওয়া যায়। সুতরাং , রাদারফোর্ড মডেল পরমাণুর স্থায়িত্বের ব্যাখ্যা দিতে পারে না।
২) শক্তি ক্ষয়ের ফলে বিভিন্ন কক্ষপথে ইলেকট্রনের ত্বরণের মান নিরবচ্ছিন্ন হারে পরিবর্তিত হওয়ায় বিকিরণ হিসেবে নিঃসৃত তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্যও নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিবর্তিত হওয়া উচিত । সুতরাং, হাইড্রোজেন , হিলিয়াম ইত্যাদি মৌলের পারমাণবিক বর্ণালি প্রকৃতিগতভাবে নিরবচ্ছিন্ন বর্ণালি হওয়া উচিত। কিন্তু পরীক্ষালব্ধ ফলাফল দেখায় যে, এক্ষেত্রে ‘ রেখা বর্ণালি ’ সৃষ্টি হয় যার ব্যাখ্যা রাদারফোর্ড মডেল থেকে পাওয়া যায় না।
৩) এই মডেল পরমাণুর গঠন সম্পর্কে গুণগত ধারণা দিতে সক্ষম হলেও ইলেকট্রনের কক্ষপথের আকার ও ব্যাসার্ধ সম্বন্ধে কোনাে ধারণা দেয় না। আবর্তনরত ইলেকট্রনের বেগ ও গতিশক্তি সম্পর্কেও এই মডেল কোনাে আলােকপাত করে না।
Excellent
Pingback: আইসোটোপ (Isotope) কাকে বলে? | আইসোবার | আইসোটোন – Studious
superb