হ্যালো বন্ধুরা, আজ আমরা আলোচনা করতে চলেছি ভৌতিবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আজ আমাদের বিষয় টি হল ” নিউক্লিয় বল “। আজ আমরা জানবো নিউক্লিয় বল কাকে বলে কি? নিউক্লিয় বলের বৈশিষ্ট্য, নিউক্লিয় বলের প্রকৃতি ইত্যাদি।
নিউক্লিয় বল কাকে বলে?
নিউক্লিয় বল (Nuclear force) : নিউক্লিয় কণা বা নিউক্লিয়নগুলির মধ্যে কার্যকরী যে অতি শক্তিশালী আকর্ষণ বল প্রোটনগুলির মধ্যে সক্রিয় স্থির তাড়িতিক বিকর্ষণ বলের প্রভাব প্রতিমিত করে নিউক্লিয়াসকে সুস্থিত রাখে, তাকে নিউক্লিয় বল বলে।
নিউক্লিয় বলের উৎপত্তি কিভাবে হয়?
নিউক্লিয় বলের উৎপত্তির কারণ : বিজ্ঞানী ওয়ার্নার হাইসেনবার্গ তাঁর প্রস্তাবিত নিউট্রন – প্রোটন প্রকল্পের (Neutron-proton hypothesis) মাধ্যমে নিউক্লিয় বলের সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা করেন। এই ধারণা অনুযায়ী, নিউক্লিয়াস মধ্যস্থ প্রোটন ও নিউট্রনের মধ্যে প্রতিনিয়ত অবিরাম গতিতে আধান বিনিময়ের ফলে প্রোটন নিউট্রনে ও নিউট্রন প্রোটনে রূপান্তরিত হয়ে থাকে। এই রূপান্তর এত দ্রুত সংঘটিত হয় যে প্রোটনগুলির মধ্যে স্বাভাবিক স্থির তাড়িতিক বিকর্ষণ কার্যকরী হওয়ার সুযোগ পায় না, পরিবর্তে এক সুতীব্র আকর্ষণ বলের উদ্ভব হয় যা নিউক্লিয়নগুলিকে জোটবদ্ধ রাখে। একেই নিউক্লিয় বল বলা হয় যা প্রোটনগুলির তড়িৎ বিকর্ষণ বল অপেক্ষা অনেক বেশি শক্তিশালী (নিউক্লিয় বল মহাকর্ষ বল অপেক্ষা প্রায় 1038 গুণ শক্তিশালী)। পরবর্তীকালে জাপানি বিজ্ঞানী হিদেকি ইউকাওয়া দেখান যে, য – মেসন কণার আদানপ্রদানের মাধ্যমে নিউট্রন ও প্রোটনের এই পারস্পরিক রূপান্তর সংঘটিত হয় ও নিউক্লিয় বল সৃষ্টি হয়। এই বল নিউক্লিয়াসকে স্থায়িত্ব প্রদান করে।
- আইসোটোপ (Isotope) কাকে বলে? | আইসোবার | আইসোটোন
- রাদারফোর্ডের পরীক্ষা | রাদারফোর্ডের আলফা কণার বিচ্ছুরণ পরীক্ষা
- রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল বর্ণনা করো | রাদারফোর্ডের মডেল
- ক্যালোরিমিতির মূলনীতি (Principles of Calorimetry) | ক্যালোরিমিটার কি?
নিউক্লিয় বলের প্রকৃতি
- নিউক্লিয় বল অত্যন্ত শক্তিশালী আকর্ষণ বল।
- নিউক্লিয় বল শুধুমাত্র নিউক্লিয়াসের মধ্যেই কার্যকরী হয়। এই বলের পাল্লা প্রায় 10-12 সেমি।
- নিউক্লিয় বলের মান নিউক্লিয়ন অর্থাৎ, নিউট্রন ও প্রোটন দ্বারা প্রভাবিত হয় না। এটি কুলম্বীয় বল ও মহাকর্ষীয় বল থেকে আলাদা।
- এটি মহাকর্ষীয় বলের চেয়ে প্রায় 1040 গুণ জোরালো।
- নিউক্লিয়াসের বাইরে এই বলের অস্তিত্ব নেই। এই বলের ক্রিয়ার পাল্লা অতি স্বল্প। দুটি নিউক্লিয়নের মধ্যে দূরত্ব 1.5 ফার্মির বেশি হলে এটি নগণ্য হয়ে দাঁড়ায়।
- এটি ব্যস্ত বর্গ সূত্র মেনে চলে না। নিউক্লিয় বল চার ধরনের (a) প্রোটন-প্রোটন বিকর্ষণ বল, (b) প্রোটন-প্রোটন আকর্ষণ বল, (c) প্রোটন – নিউট্রন আকর্ষণ বল , (d) নিউট্রন – নিউট্রন আকর্ষণ বল।
নিউক্লিয় বল সম্পর্কে এই পোস্ট টি ভালো লাগলে অবশ্যই comment করতে ভুলবেন না। আমাদের ব্লগে লেখা পাঠানোর জন্য email করুন [email protected]
Pingback: আয়ন কাকে বলে? আয়ন কত প্রকার ও কি কি | আয়োনাইজেশন শক্তি – Studious
Pingback: আলোর প্রতিসরণ | প্রতিফলনের নিয়ম ও সূত্র | প্রতিসরাঙ্ক ও স্নেলের সূত্র – Studious
Pingback: স্থিতিস্থাপকতা (Elasticity) কাকে বলে? | পীড়ন কি | বিকৃতি কি – Studious
Pingback: প্রিজমের চ্যুতি কোণের রাশিমালা | প্রিজমের চ্যুতি কোণ কাকে বলে – Studious