চিকিৎসা বিজ্ঞানে আমরা এক্স রশ্মি সম্পর্কে কম বেশি সবাই শুনেছি। আজ আমরা এই পোস্টে এক্স রশ্মির ব্যবহার ও ধর্ম সম্পর্কে জানবো। জানবো এক্স রশ্মি কাকে বলে? এক্স রশ্মি ও গামা রশ্মির পার্থক্য, ইত্যাদি।
এক্স রশ্মি কাকে বলে?
যখন দ্রুতগতিসম্পন্ন ইলেকট্রন উপযুক্ত কঠিন লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করে এবং নিজের গতিশক্তি (1-2%) বর্জন করে তখন ওই কঠিন লক্ষ্যবস্তু থেকে উচ্চ ভেদনক্ষমতাযুক্ত এবং ক্ষুদ্রতর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের এক ধরনের। অদৃশ্য তড়িৎ-চুম্বকীয় বিকিরণ বেরিয়ে আসে। এই বিকিরণকে এক্স-রশ্মি বলা হয়। এক্স-রশ্মির আবিষ্কারক বিজ্ঞানী রন্টজেনের নাম অনুযায়ী একে রন্টজেন-রশ্মি ও বলে।
এক্স রশ্মির ধর্ম
1) এক্স রশ্মি উচ্চ শক্তিসম্পন্ন ফোটন কণার স্রোত।
2) এক্স রশ্মি দর্শনের অনুভূতি জাগায় না।
3) এক্স রশ্মি তড়িৎক্ষেত্র বা চৌম্বকক্ষেত্র দ্বারা বিক্ষেপিত হয় না।
4) শূন্য মাধ্যমে এক্স রশ্মি আলোর বেগের ( 3×10^8 m/s সমান বেগে চলে।
5) এক্স রশ্মি কোনো গ্যাসের মধ্য দিয়ে গেলে ওই গ্যাসকে আয়নিত করতে পারে।
6) এক্স রশ্মি ফোটোগ্রাফিক প্লেটের ওপর ক্রিয়া করে। 7) বিশেষ অবস্থায় সাধারণ আলোর মতো এক্স – রশ্মির প্রতিফলন, প্রতিসরণ, ব্যতিচার প্রভৃতি ধর্ম দেখা যায়। 8) দৃশ্যমান আলোকরশ্মির থেকে এক্স – রশ্মি বেশি শক্তিশালী।
9) সাধারণ আলোর ক্ষেত্রে অস্বচ্ছ অনেক কঠিন বস্তুর মধ্য দিয়ে এক্স রশ্মি চলে যেতে পারে। তবে এর ভেদনক্ষমতা তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ওপর নির্ভরশীল।
10) এক্স রশ্মি কিছু বিশেষ ধাতব পাতের ওপর পড়লে বিক্ষেপিত এবং বৈশিষ্ট্যমূলক গৌণ এক্স-রশ্মি সৃষ্টি করে।
কঠিন কোমল ও এক্স যে এক্স রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য অপেক্ষাকৃত বেশি ও ভেদনক্ষমতা অপেক্ষাকৃত কম , তাকে কোমল এক্স – রশ্মি বলে। যে এক্স – রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য অপেক্ষাকৃত কম ও ভেদনক্ষমতা বেশি তাকে কঠিন এক্স – রশ্মি বলা হয়।
আরও পড়ুন:-
- নিউটনের গতিসূত্র ও ব্যাখ্যা – Newton’s laws of motion
- রাসায়নিক বিক্রিয়া কাকে বলে, রাসায়নিক বিক্রিয়ার কারণ ও বৈশিষ্ট্য
- আলোর প্রতিসরণ | প্রতিফলনের নিয়ম ও সূত্র | প্রতিসরাঙ্ক ও স্নেলের সূত্র
এক্স-রশ্মির ব্যবহার
1) শরীরের কোনো অংশের হাড় ভেঙে গেলে বা শরীরে অবাঞ্ছিত বস্তু প্রবেশ করলে তার অস্তিত্ব জানতে, আলসার, টিউমার প্রভৃতির অস্তিত্ব জানতে এক্স-রশ্মি ব্যবহৃত হয়।
2) রোগাক্রান্ত কোশকে ধ্বংস করতেও এক্স রশ্মি ব্যবহৃত হয়।
3) লোহার কড়ি, বরগা, থাম, কারখানার বয়লার প্রভৃতিতে কোনো চিড় বা ফাটল আছে কি না তা নির্ণয়ে এক্স-রশ্মি ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও হিরে ও অন্যান্য মূল্যবান পাথরের বিশুদ্ধতা নির্ণয়ে একে ব্যবহার করা হয়।
4) বিভিন্ন কেলাসের গঠন নির্ণয়ে ও উচ্চতর গবেষণায় এক্স রশ্মি ব্যবহৃত হয়।
এক্স রশ্মি ও গামা রশ্মির সাদৃশ্য
1) উভয়ই তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ।
2) উভয়ই প্রতিপ্রভার সৃষ্টি করে ও ফোটোগ্রাফিক প্লেটে ক্রিয়া করে।
3) উভয়েরই আয়নন ও ভেদনক্ষমতা আছে।
4) উভয়ই তড়িৎক্ষেত্র ও চৌম্বকক্ষেত্র দ্বারা বিক্ষিপ্ত হয় না।
এক্স রশ্মি ও গামা রশ্মির পার্থক্য
X রশ্মি | গামা রশ্মি |
তরঙ্গদৈর্ঘ্য অপেক্ষাকৃত বেশি। | তরঙ্গদৈর্ঘ্য অপেক্ষাকৃত কম। |
এর ফোটন – শক্তি অপেক্ষাকৃত কম। | এর ফোটন শক্তি অপেক্ষাকৃত বেশি। |
এর ভেদনক্ষমতা ও আয়নন ক্ষমতা অপেক্ষাকৃত কম। | এর ভেদনক্ষমতা ও আয়নন ক্ষমতা অপেক্ষাকৃত বেশি। |
পরমাণুর এক শক্তিস্তর থেকে অন্য শক্তিস্তরে ইলেকট্রনের সংক্রমণের জন্য নিঃসৃত হয়। | তেজস্ক্রিয় বিঘটনের সময় নিঃসৃত হয় । সংক্রমণের জন্য নিঃসৃত হয় |
Covered Topics: X ray এর ব্যবহার লেখ, এক্স রশ্মি কাকে বলে, x রশ্মির ব্যবহার, এক্স রশ্মির ধর্ম, এক্স রশ্মির ব্যবহার লেখো, এক্স রশ্মি কি কি কাজে লাগে, এক্স রশ্মি সৃষ্টির কারণ লেখ,
Pingback: তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে? | তেজস্ক্রিয়তার কারণ কি – Studious