Skip to content

নিউক্লিয়াস কি? | নিউক্লিয়াসের গঠন ও কাজ

  • by
নিউক্লিয়াস কি ? নিউক্লিয়াসের গঠন ও কাজ

নমস্কার বন্ধুরা, আজ আমাদের বিষয় হল “কোষের নিউক্লিয়াস “। আজ জানব একটি কোষে নিউক্লিয়াস কি ভূমিকা পালন করে? কেনই বা কোষের নিউক্লিয়াস কে কোষের মস্তিস্ক বলা হয়? সুতরাং যাবতীয় কোষের নিউক্লিয়াস সম্পর্কিত প্রশ্নের ভান্ডার নিয়ে শুরু করা যাক আজকের বিষয়।

নিউক্লিয়াস কি?

ইউক্যারিওটিক কোষের প্রোটোপ্লাজমের সবচেয়ে ঘন, প্রায় গোলাকার, প্রোটিন ও লিপিড দিয়ে তৈরি দুটি একক পর্দা দিয়ে ঢাকা যে অংশ বংশগত পদার্থ ও DNA বহন করে এবং কোষের যাবতীয় বিভিন্ন কাজগুলি নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে নিউক্লিয়াস বলে। ল্যাটিন ভাষায় নিউক্লিয়াসের অর্থ হল শাঁস।

নিউক্লিয়াস এর  রাসায়নিক উপাদান।

নিউক্লিয়াসে 9-12%  DNA। 15% হিস্টোন প্রোটিন, 5% RNA। 65% আম্লিক ও প্রশমিত প্রোটিন থাকে এবং খনিজ লবণ থাকে।

নিউক্লিয়াসের কাজ

বিপাকীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ: উৎসেচক সংশ্লেষের মাধ্যমে নিউক্লিয়াস বিভিন্ন কাজ বিপাকীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে, এইজন্য নিউক্লিয়াসকে কোষের মস্তিষ্ক বলা হয়।

বংশগত বৈশিষ্ট্যের তথ্যের ভাণ্ডার: নিউক্লিয়াসের মধ্যে জীবদেহে বংশগত বৈশিষ্ট্য সংরক্ষিত থাকে।

RNA সংশ্লেষ: নিউক্লিওলাসে RNA সংশ্লেষ ঘটে।

কোষ বিভাজন: নিউক্লিয়াস কোষ বিভাজনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে

বংশগত বৈশিষ্ট্যের সঞ্চারণ: নিউক্লিয়াসের মধ্যস্থ DNA বিভিন্ন বংশগত বৈশিষ্ট্য একটি জনু থেকে পরবর্তীতে জনুতে সঞ্চারিত করে।

প্রকরণ বা ভেদ সৃষ্টি: নিউক্লিয়াসে অবস্থিত ক্রোমোজোমের গঠন ও সংখ্যার পরিবর্তনের জন্য প্রকরণ বা ভেদ সৃষ্টি হয়।

ইউক্যারিওটিক কোষের নিউক্লিয়াস এর গঠন

আদর্শ নিউক্লিয়াস এর চারটি অংশ-
1) নিউক্লিয় পর্দা।
2) নিউক্লিওলাস।
3) নিউক্লিওপ্লাজম।
4) নিউক্লিয় জালিকা।

নিউক্লিক পর্দা কী?

নিউক্লিয়াসকে বেষ্টন করে যে দ্বি-একক পর্দা বেষ্টিত থাকে, যা নিউক্লিওলাস কে সাইটোপ্লাজমের থেকে পৃথক করে রাখে, তাকে নিউক্লিয় পর্দা বলে। দুটি পর্দার মধ্যবর্তী অংশকে  নিউক্লিয়ার সিস্টারনি বলে। নিউক্লিয় পর্দার স্থানে স্থানে যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র থাকে তাকে নিউক্লিয় রন্ধ্র বলে। এই রন্ধ্র গুলির নিউক্লিওলাস সাইটোপ্লাজমের সঙ্গে সংযোগ বজায় রাখে।

নিউক্লিক পর্দা এর কাজ

1) নিউক্লিয় পর্দা নিউক্লিয়াসকে আকৃতি প্রদান করে।
2) নিউক্লিয় রন্ধ্রের মাধ্যমে নিউক্লিওলাস ও সাইটোপ্লাজমের মধ্যে সংযোগ রক্ষিত হয়।
3) নিউক্লিয় পর্দা সাইটোপ্লাজম ও নিউক্লিওলাসকে পৃথক করে রাখে।

নিউক্লিওপ্লাজম কি?

নিউক্লিওপ্লাজম= নিউক্লিয় পর্দা বেষ্টিত নিউক্লিয়াসের মধ্যে যে স্বচ্ছ, ঈষৎ আম্লিক, অর্ধতরল, দানাযুক্ত, ধাত্রবস্তু থাকে, তাকে নিউক্লিওপ্লাজম। এতে নিউক্লিওপ্রোটিন, বিভিন্ন উৎসেচক, বিভিন্ন জৈব ও অজৈব পদার্থ, খনিজ লবণ প্রভৃতি উপস্থিত থাকে।

নিউক্লিওপ্লাজম এর কাজ 
1) এটি নিউক্লিয়াসে ধাত্র রূপে কাজ করে।
2) এখানে নিউক্লিয়াসের অন্যান্য অংশ উপস্থিত থাকে।

নিউক্লিয় জালিকা কি?

নিউক্লিয় জালিকা= নিউক্লিওপ্লাজমে ভাসমান নিউক্লিওপ্রোটিন দিয়ে গঠিত সূত্রাকার জালক গুলিকে নিউক্লিয় জালিকা বা ক্রোমাটিন জালিকা বা নিউক্লিয়ার রেটিকিউলার বলে। কোষ বিভাজনের সময় এই নিউক্লিয় জালিকা গুলি থেকে ক্রোমোজোম সৃষ্টি হয়। ক্রোমোজোম জিন থাকে। এই জিন গুলি বিভিন্ন বংশগত বৈশিষ্ট্য বংশানুক্রমে সঞ্চারিত করে। ক্রোমাটিন জালিকা সূত্রাবলী বিভিন্ন নিউক্লিক অ্যাসিড ও প্রোটিন দিয়ে গঠিত। এই ক্রোমাটিন দুই ধরনের হেটারোক্রোমাটিন ও ইউক্রোমাটিন

নিউক্লিয় জালিকা কাজ
1) কোষ বিভাজনের সময় ক্রোমোজোম গঠন করা।
2) বংশগত বৈশিষ্ট্য DNA বহন করা।

নিউক্লিওলাস কি

নিউক্লিয়াসের সর্বাপেক্ষা ঘন, উজ্জ্বল, গোলাকার বা উপবৃত্তাকার গঠন টিকে নিউক্লিয়াস বলে। এটি RNA ও প্রোটিন দ্বারা গঠিত। সাধারণত একটি নিউক্লিয়াসে একটি নিউক্লিওলাস থাকে  নিউক্লিওলাস এর চারটি অংশ যথা-
গ্রানুলার বা দানাদার অঞ্চল।
ফাইব্রিলার বা সূত্রাকার অঞ্চল।
অ্যামরফার বা অনিয়তাকার অঞ্চল।
অন্তঃ ও বহিঃ নিউক্লিয়ার ক্রোমাটিন।

নিউক্লিওলাস এর কাজ

1) নিউক্লিয় প্রোটিনের সঞ্চয় স্থল হিসাবে কাজ করে।

2) RNA উৎপাদনে ও প্রোটিন সংশ্লেষে সাহায্য করে।